যে কারণে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে রদ্রিকে বাদ দেয়া যাবে না

|

ছবি: সংগৃহীত

স্নায়ুর পরীক্ষায় খুব ভালো করতে পারেননি প্রথমার্ধে। পজিশনিং থেকে শুরু করে পাসিং- দুই জায়গায়ই কিছু এলোমেলো ছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ঠিক ঠিক সময়ে ছিলেন ঠিক জায়গায়। নিয়েছেন ম্যাচের নিখুঁততম শট; যে শটে এলো ম্যানচেস্টার সিটির ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোল। এই গোলের মঞ্চের নাম চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল। বছর দুই আগে এমনই এক ফাইনালে রদ্রিকে না খেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে হয়তো গত রাতের আগ পর্যন্ত আফসোস করেছেন পেপ গার্দিওলা। রদ্রি থাকা আর না থাকা- ফাইনালের বিশাল মঞ্চে কত বড় পার্থক্যই না গড়ে দেয়!

পুরো ম্যাচকেই জোরদার এক ঝাঁকি দিয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটির এই সেন্ট্রাল ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। তবে প্রথমার্ধে ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে নিজেই টের পেয়েছেন কাঁপুনি। ম্যান সিটির কোনো খেলোয়াড়ই যে জানতো না কীভাবে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে সফল হতে হয়! তবে বিজয়ীর মানসিকতাই দেখিয়েছেন এই স্প্যানিশ ফুটবলার। এই মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ কাপের পর চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রতিটি ধাপে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দেয়া সিটির সাথে ফাইনালে দেখা হয় সুশৃঙ্খল ইন্টার মিলানের। চলতি মৌসুমে পেপ গার্দিওলার দল তাদের সবচেয়ে খারাপ পারফরমেন্সই হয়তো দেখিয়েছে ইস্তাম্বুলের এই মহারণে। কিন্তু দুইপক্ষের সাবধানী ফুটবল ও গোল মিসের মাঝে রদ্রি ছিলেন বলেই রক্ষা!

রিয়াল মাদ্রিদ, বায়ার্ন মিউনিখকে যে ফুটবল দিয়ে দর্শক বানিয়ে ছেড়েছিল পেপ গার্দিওলার দল, তার ছিটেফোঁটাও এদিন দেখা যায়নি। কাইল ওয়াকারকে একাদশে না রেখে আবারও ২০২১ সালের চেলসির বিরুদ্ধে ফাইনালের কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন সিটি কোচ। সেই ফাইনালের দুঃস্মৃতি আরও শক্তভাবে ফিরে আসে দলের প্রাণভোমরা কেভিন ডি ব্রুইনা হ্যামস্ট্রিংয়ে আঘাত পেয়ে প্রথমার্ধেই মাঠ ছাড়লে। মসৃণ পাসিং, নিখুঁত বোঝাপড়া নিয়ে গার্দিওলার ‘টুইস্টিং-টার্নিং অ্যান্ড রিপিটিং আগেইন’ পদ্ধতি, ইন্টারের হাই প্রেসিংয়ে সেটাও মার খেয়ে যাচ্ছিল বারবার। জন স্টোনসের কাটব্যাকও খুঁজে পাচ্ছিল না কোনো ফরওয়ার্ডকে। আর্লিং হাল্যান্ড ছিলেন বোতলবন্দি।

এরকম এক ছন্নছাড়া ম্যাচে অচেনা ম্যান সিটির প্রয়োজন ছিল ভোজবাজির মতো ঘটে যাওয়া কোনো চমকের। পরম আরাধ্য ট্রফি জিততে প্রয়োজন ছিল একটি মাত্র গোলের। আর সেটিই দিলেন রদ্রি। ম্যানুয়েল আকাঞ্জির পাস পেয়ে যান ডি বক্সে ডানদিকে ফাঁকায় থাকা বার্নাদো সিলভা। তার ক্রস ইন্টারের এক খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে যায় ম্যান সিটির মিডফিল্ডার রদ্রির পায়ে। দৌড়ে এগিয়ে এসে রদ্রির নেয়া দুর্দান্ত এক শট ইন্টার দুই খেলোয়াড়ের পাশ দিয়ে গোলরক্ষক ওনানাকে দর্শক বানিয়ে জড়িয়ে গেলো জালে। এটাই সেই রদ্রি; চেলসির বিপক্ষে ২০২১’র ফাইনালে যাকে বেঞ্চে বসিয়ে রেখেছিলেন গার্দিওলা!

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply