কারাদণ্ডের পর ৫ বছরের জন্য রাজনীতিতে নিষিদ্ধ হয়েছেন ইমরান খান। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। এ পরিস্থিতিতে তেহরিক-ই-ইনসাফ বা, পিটিআই’র ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অবশ্য, সাজা পুনরায় খতিয়ে দেখতে পিটিশন দাখিল করেছে ইমরানের আইনজীবী দল। তাদের প্রত্যাশা- ইসলামাবাদ হাইকোর্ট পাল্টে দিতে পারেন পাশার দান। জিও নিউজের খবর।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে আলোচিত তোশাখানা মামলাটি করেছিল পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। অভিযোগ ছিল, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে পাওয়া রাষ্ট্রীয় উপহার তোশাখানায় জমা না দিয়ে বিক্রি করেছেন ইমরান। নির্বাচনী হলফনামায় এর উল্লেখ ছিল না। শনিবার (৫ আগস্ট) আদালতে সেই অভিযোগ প্রমাণিত হলে ইমরান খানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড শোনানো হয়; সাথে ১ লাখ রুপি জরিমানা। বর্তমানে তিনি পাঞ্জাবের কারাগারে সাজা খাটছেন। সেই ধারাবাহিকতায় আসে সরকারি পদে তার দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন।
মঙ্গলবার, প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে সেটিও স্পষ্ট করে নির্বাচন কমিশন। ৫ বছরের জন্য তাকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করা হয়। পিটিআই মুখপাত্র জুলফিকার বুখারি বলেন, নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তই প্রমাণ করে, পাকিস্তানের রাজনীতি থেকে পুরোপুরি ইমরান খানকে নিশ্চিহ্ন করতে চায় সরকার। তাছাড়া, ইসি যে ক্ষমতাসীন জোটের চাটুকার সেটা নতুনভাবে জানানোর প্রয়োজন নেই। ভুললে চলবে না, ইমরান বরাবরই পিটিআই’র চেয়ারম্যান ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। আমাদের প্রত্যাশা, হাইকোর্ট তার মামলাটি আমলে নেবেন। সেক্ষেত্রে পাল্টাতে পারে সাজার রায়।
একদিকে দলের কর্ণধার জেলখানায় বন্দি। অন্যদিকে, রাজনীতি চর্চার সুযোগও নেই। তার ওপর, বিপুল সংখ্যক পিটিআই নেতাকর্মী ৯ মে’র সহিংসতার ঘটনায় এখন কারাগারে। অনেকেরই বিচার চলছে সামরিক আদালতে। এ পরিস্থিতিতে তেহরিক-ই-ইনসাফের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাজহার আব্বাস বলেন, চেয়ারম্যান ইমরান খান কারাবন্দি। ৫ বছর তার রাজনীতির ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে, পিটিআই’র সাথে সেনাবাহিনীর সংলাপের সুযোগ খুবই ক্ষীণ। তাছাড়া, ৪ প্রদেশে দলটি আদৌ নির্বাচন করতে পারবে কিনা, সেটা নিয়েও রয়েছে সন্দেহ। কারণ, তৃণমূলের প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার কর্মী বর্তমানে জেলে।
সিন্ধু প্রদেশের এমকিউএম নেতা রানা আনসার বলেন, ২০১৮ সালে মসনদে বসেছিল পিটিআই। ক্ষমতায় এসেছে বললেও ভুল হবে, আনা হয়েছিল। ঠিক সেভাবেই তাদের ঘরে পাঠিয়ে দিলেন আদালত। কারণ, একজন বিবেকবান দলনেতা কখনোই সীমান্তের হেফাজতকারী সেনা সদস্যদের দিকে আঙুল তুলবেন না।
২০২২ সালের এপ্রিলে, অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হয় ইমরান খানকে। তারপরই, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে করা হয় দেড় শতাধিক মামলা। কিন্তু, তেহরিক ই ইনসাফ বা, পিটিআই’র জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি। বরং, উপ-নির্বাচনগুলোয় ব্যাপক সাফল্য পায় দলটি। ৯ মে আদালত প্রাঙ্গন থেকে ইমরান খান গ্রেফতার হলেও দু’দিনের ব্যবধানে মুক্তি পান। এবার পরিস্থিতিকে অনেকটাই ভিন্ন বলে অভিহিত করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ, এবার আর চোখে পড়েনি ইমরান সমর্থকদের বিক্ষোভ-প্রতিবাদ।
/এম ই
Leave a reply