শেখ হাসিনাকে দুর্বল করলে ক্ষতি সবার, আমেরিকাকে নয়াদিল্লির বার্তা: আনন্দবাজার

|

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি।

বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন শেখ হাসিনা সরকার দুর্বল হলে তা ভারত ও আমেরিকা কারও জন্যই সুখকর হবে না বলে মনে করে নয়াদিল্লি। কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার এ তথ্যটি জানিয়েছে। বলা হয়েছে, একাধিক স্তরের বৈঠকে বাইডেন প্রশাসনকে এ কথা জানিয়েছে নয়াদিল্লি। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আমেরিকার বর্তমান ভূমিকায় ভারত যে খুশি নয়, ওয়াশিংটনকে সেই বার্তাও পৌঁছে দেয়া হয়েছে।


যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।

গত ১৭ আগস্ট আনন্দবাজারে প্রকাশিত অগ্নি রায়ের লেখা প্রতিবেদনে নয়াদিল্লির নানা কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, ঢাকায় সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হোক এটা ওয়াশিংটনের মতো ভারতও চায়। কিন্তু যেভাবে হাসিনা সরকারকে অস্থির করার জন্য আমেরিকার তরফ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে, তা প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসাবে ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ইতিবাচক নয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর তিন সপ্তাহ পরেই নয়াদিল্লিতে এক মঞ্চে বসবেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে ভারতের এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। সাউথ ব্লক মনে করে, জামায়াতে ইসলামীকে ‘রাজনৈতিক ছাড়’ দেয়া হলে অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা মৌলবাদের দখলে চলে যাবে।

কূটনৈতিক মহলের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার আরও বলেছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করছে কাবুলের পাশাপাশি ভারতের অন্য প্রতিবেশী সম্পর্কে আমেরিকার নীতিও নয়াদিল্লির জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে অস্বস্তি বাড়াচ্ছে। ভারতের সঙ্গে দীর্ঘতম স্থলসীমান্ত রয়েছে বাংলাদেশের। ফলে বাংলাদেশের যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতি ভারতেও প্রভাব ফেলে।

আনন্দবাজার বলেছে, নয়াদিল্লি বাইডেন প্রশাসনকে জানিয়েছে যে, জামায়াতকে আস্কারা দিলে একদিকে যেমন ভারতের আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বাড়তে পারে, তেমনি চীনের প্রভাব বাংলাদেশে অনেকটাই বেড়ে যাবে, যা কাঙ্ক্ষিত নয় ওয়াশিংটনেরও। মনে করা হচ্ছে, আমেরিকা জামায়াতকে বরাবর রাজনৈতিক ইসলামিক সংগঠন হিসাবেই দেখানোর চেষ্টা করে। মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে তাকে তুলনা করে আমেরিকা। কিন্তু বাস্তবে জামায়াত যে উগ্রপন্থী সংগঠন, সে ব্যাপারে নিঃসন্দেহ নয়াদিল্লি।

বাংলাদেশের জন্য বাইডেন প্রশাসনের পৃথক ভিসানীতি ঘোষণা আদৌ উচিত হয়নি বলে মনে করছে নয়াদিল্লি। এই ভিসানীতির ফলে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন যারা বানচাল করার চেষ্টা করবে, তারা আমেরিকায় প্রবেশের অধিকার পাবে না। সূত্রের বরাতে আনন্দবাজার উল্লেখ করেছে, ভারতের কূটনৈতিক শিবির মনে করছে, আমেরিকার প্রশাসন সরাসরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলাতেই নিজের দেশের আইন প্রয়োগ করে বাংলাদেশের জন্য পৃথক ভিসানীতি গ্রহণ করেছে।

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল নয়াদিল্লি গিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব তথা দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করে গিয়েছেন। সেখানে তারাও বার্তা দিয়েছেন, আঞ্চলিক স্থিতি বজায় রাখার প্রশ্নে বিএনপি-জামায়াত জোট বিপজ্জনক। প্রতিনিধি দলের নেতা কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সাথে বৈঠক শেষে বলেছেন, শেখ হাসিনা সরকার এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে, বাংলাদেশের মাটিকে ভারত বিরোধী কার্যকলাপে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply