ট্রফির ওপর পা: কী বোঝাতে চাইলেন মার্শ?

|

বিশ্বকাপ ট্রফিকে পাদানি হিসেবে ব্যবহার করলেন অজি ক্রিকেটার মার্শ। ছবি: ইন্সটাগ্রাম

আল মাহফুজ:

ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩টি আসরের মধ্যে ছয়বারই শিরোপা জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। গড়ে প্রায় এক আসর পরপর তারা বিশ্ব শিরোপা উঁচিয়ে ধরার গৌরব অর্জন করে। ট্রফি ছুঁয়ে দেখা তাদের কাছে হয়তো ‘ডালভাত’ পর্যায়ে চলে গেছে। সেই খুব সাধারণ ব্যাপারটার কারণেই কিনা সদ্য বিশ্বকাপ ক্রিকেট জেতা অস্ট্রেলিয়ান তারকা মিচেল মার্শ করে বসলেন বিতর্কিত এক কাজ! যে শিরোপা হাতে তোলা সবার জন্য অতি আকাঙ্ক্ষার, সেই ট্রফির ওপর দিব্যি দু’পা তুলে ছবি তুললেন তিনি!

সোমবার (১৯ নভেম্বর) বিশ্বকাপ জেতার পরে দলের উদযাপনের বেশ কয়েকটি ছবি নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে দেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। সেখানেই একটি ছবিতে দেখা যায়, মিচেল মার্শ হেলান দিয়ে বসে আছেন চেয়ারে। দুই পা ট্রফির ওপর তুলে হাসি মুখে আয়েশি উদযাপন করছেন অস্ট্রেলিয়া দলের এই অলরাউন্ডার। এক হাতে পানীয়ের বোতল, অন্য হাত মুষ্টিবদ্ধ। এই ছবি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠেছে সমালোচনার ঝড়। নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন নেটিজেনরা।

তবে মার্শের এমন আচরণ বা কর্মকাণ্ড অবশ্য নতুন নয়। বিশ্বকাপ ফাইনালের আগেও তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন– ফাইনালে ভারতকে গুঁড়িয়ে দেবেন। প্রথমে ব্যাট করে তারা ৪২০ রান করবেন এবং ভারতকে অলআউট করে দেবেন ৬৫ রানে।

সাধারণত যেকোনো খেলায় বিশ্বকাপ জেতার পর ট্রফিতে চুমু খান, ট্রফিটি মাথার ওপর উঁচিয়ে ধরেন খেলোয়াড়রা। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উদগ্র বাসনা এবং খেলাটির প্রতি ভালোবাসা থেকেই এমনটা করে থাকেন খেলোয়াড়রা। যেমন ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ জেতার পর ট্রফিটিকে বুকে জড়িয়ে লিওনেল মেসির ঘুমানোর ছবি বিশ্ববাসী দেখেছে। ট্রফির প্রতি এমন ভালোবাসার রোমাঞ্চকর উদাহরণ আরও অনেক রয়েছে।

পাশাপাশি অন্য উদাহরণও রয়েছে। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের পর ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্যাড পড়া অবস্থায় দুই পা টেবিলের উপর রেখে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছিলেন মারলন স্যামুয়েলস। আন্তর্জাতিক মিডিয়া সেদিন দেখেছিল, ‘গর্বে মাটিতে না পড়া’র বাস্তব দৃষ্টান্ত। কারণ, ইংলিশদের বিপক্ষে সেই ফাইনালের ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’ হয়েছিলেন স্যামুয়েলস। সেই ম্যাচে ৬৬ বলে ৮৫ রানের বিস্ফোরক নক খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন।

সেদিন সম্ভবত স্যামুয়েলস তার পা টেবিলের উপরে রেখে প্রমাণ করার চেষ্টা করছিলেন যে, তিনি বিশ্বজয়ী দলের সদস্য। তার মনে হয়তো বিশ্ব জয়ের অনুভবের সমীরণ ছুঁয়ে যাচ্ছিল। ফাইনাল জয়ের পর তাই হয়তো স্যামুয়েলসের জেদ চেপে গিয়েছিল, জগতকে অথবা নিজের দেশের বোর্ডকে কিছু দেখিয়ে দেয়ার। কারণ, সেই আসরের পুরোটা সময় ‘আস বনাম দেম’ মনোভাব নিয়ে খেলছিল উইন্ডিজ।

তবে মিচেল মার্শ কেন এমনটা করেছেন, সেটা একমাত্র তিনিই বলতে পারবেন। কারণ, তার এই কর্মকাণ্ডকে ‘ইনডিসেন্ট’ কিছু মনে করেনি অস্ট্রেলিয়া। মনে করলে দলনায়ক নিশ্চয়ই তার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিটি পোস্ট করতেন না। হয়তো অজি দলের ড্রেসিংরুমে এমনটাই স্বাভাবিক ঘটনা। অথবা তাদের মনোভাবটাই এমন ছিল যে, বিশ্বকে আমাদের সামর্থ্য দেখিয়ে দিলাম। যেমনটা দেখিয়েছিলেন মারলন স্যামুয়েলস বিশ্বকাপ জয়ের পরও।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply