ভারতের ২য় ব্যাটসম্যানকে ফেরালেন মাশরাফী

|

এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশের দেয়া ২২৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে ভারত। ওপেনিংয়ে নেমে চড়াও হয়ে খেলছিলেন শিখর ধাওয়ান। তাকে ফিরিয়ে টাইগারদের প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দিলেন নাজমুল ইসলাম অপু। সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানিয়ে তাকে ফেরালেন তিনি।

এরপরই আঘাত হানেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। দলীয় ৪৬ রানে ম্যাশের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন আম্বাতি রাইডু। ৮ ওভার শেষে ভারত পরিণত হয় ৪৯/২।

এর আগে ফাইনালে লড়াইয়ে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। গোটা টুর্নামেন্টে ওপেনিং সমস্যায় ভুগছিল টাইগাররা। তা কাটিয়ে উঠতে মেহেদী হাসান মিরাজকে ওপেনিংয়ে নামিয়ে চমক দেয় টিম ম্যানেজমেন্ট। এতে যেন সমাধানের পথ খুঁজে পায় বাংলাদেশ। লিটন দাস-মিরাজ মিলে এনে দেন উড়ন্ত সূচনা। উদ্বোধনী জুটিতে তারা তোলেন ১২০ রান।

মিরাজ শুধু সাপোর্ট দিয়ে যান। অন্য প্রান্তে ঝড়ো গতিতে রান তোলেন লিটন। তাদের জুটি ভাঙেন পার্টটাইমার কেদার যাদব। তাকে তুলে মারতে গিয়ে পয়েন্টে ধরা পড়েন মিরাজ (৩২)। এরপরই পথ হারায় বাংলাদেশ। যুজবেন্দ্র চাহালের বল ইমরুল কায়েসের প্যাডে লাগলে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। পরে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। তাতে দেখা যায়, বল বাইরে পিচ করে স্ট্যাম্পে আঘাত হানছে। তবে আম্পায়ার কল হওয়ায় সাজঘরে ফিরতে হয় বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে।

খানিক পরই কেদারের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে জাসপ্রিত বুমরাহর তালুবন্দি হয়ে ফেরেন ব্যাটিং স্তম্ভ মুশফিকুর রহিম। এরপর দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউটের শিকার হয়ে ফেরেন ইনফর্ম মোহাম্মদ মিঠুন। এতে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। সেই বিপর্যয়ের মুখে দৃঢ়তার পরিচয় দিতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কুলদ্বীপ যাদবের বলে অযাচিত বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে বুমরাহর হাতে ধরা পড়েন তিনি।

সতীর্থদের যাওয়া-আসার মাঝে একপ্রান্ত আগলে রাখেন লিটন। শুরু থেকেই স্বভঙ্গিমায় খেলে যান তিনি। চরম বিপর্যয়ের মধ্যেই ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন এ ডানহাতি ওপেনার। মাত্র ৮৭ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান। করুণ পরিস্থিতিতে লড়ে যাচ্ছিলেন লিটন। শেষ পর্যন্ত বিতর্কিত আউট থামিয়ে দেয় তাকে।

সেঞ্চুরির পর হাত খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন লিটন। ঠিক সেই মুহূর্তে কুলদ্বীপের বলে মাহেন্দ্র সিং ধোনির স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি। ফাঁদে পড়েন বললে ভুল হবে, তাকে ট্র্যাপে ফেলা হয়। চায়নাম্যান বোলারের বলটি মিস করলেও পা দাগের মধ্যেই ছিল লিটনের। তবু রিপ্লে দেখেন আম্পায়ার। কয়েকবার জুম করে দেখার পর তাকে আউট দিয়ে দেন তৃতীয় আম্পায়ার রড টাকার। এতে থামে তার লড়াই। এর আগে ১১৭ বলে ১২ চার ও ২ ছক্কায় ১২১ রানের ঐতিহাসিক ইনিংস খেলেন প্রতিশ্রুতিশীল ও সম্ভাবনাময়ী এ ওপেনার। ভারতীয় সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমানে ইএসপিএনের ভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জেরেকার বলেছেন, লিটনকে আউটের সিদ্ধান্তটি সঠিক হয়নি বলে তিনি মনে করেন।

এতে বাংলাদেশের বড় স্কোর গড়ার স্বপ্ন কার্যত ধূলিসাৎ হয়ে যায়। পরক্ষণেই কুলদ্বীপের বলে স্টাম্পিং হয়ে ফেরেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। শেষদিকে লড়াইয়ের চেষ্টা করেন সৌম্য সরকার। আম্বাতি রাইডু ও ধোনির যৌথ প্রচেষ্টায় রানআউটে কাটা পড়লে তার লড়াইও থামে। ৪৫ বলে ১টি করে চার-ছক্কায় ৩৩ রান করে ফেরেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজে ফেরার এ ব্যাটসম্যান।

শেষ পর্যন্ত দেড় ওভার বাকি থাকতেই ২২২ রানে গুটিয়ে যায় মাশরাফি বাহিনী। ভারতের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন কুলদ্বীপ। ৪৫ রান খরচায় তিনি নেন ৩ উইকেট। ২ উইকেট ঝুলিতে ভরেন কেদার।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply