জয় দিয়ে প্রস্তুতি সারলো টাইগাররা

|

ছবি: সংগৃহীত

নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ২৬ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করতে নেমে তানজিদ তামিম, লিটন দাস, সৌম্য সরকার ও রিশাদ হাসানের অর্ধশতকে ৩৩৪ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারত পোপলি ও স্বন্দ্বীপ প্যাটেল জোড়া হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিলেও বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ৪ বল বাকি থাকতেই ৩০৮ রানে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা।

বার্ট সাটক্লিফ ওভাল স্টেডিয়ামে এদিন একদিনের প্রস্তুতি ম্যাচে আগে ব্যাট করে লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। গা গরমের ম্যাচ খেলেননি অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, সহ অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। ছিলেন না মুশফিকুর রহিমও।

আগে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশকে দারুণ শুরু এনে দেন দুই ওপেনার আনামুল হক বিজয় ও তানজিদ হাসান তামিম। শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করেন আনামুল। দারুণ সব শট খেলে চারটি চার ও একটি ছক্কাও মারেন ডানহাতি এই ওপেনার। দুর্দান্ত শুরু করলেও হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি বিজয়ের। ফিল্ডের অফ স্টাম্পে পড়ে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ড্রাইভ করেছিলেন তিনি। তবে বলের লাইন মিস করায় ২৬ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলে ফিরতে হয় তাকে।

বিজয় ফেরার পর দ্রুত রান তুলতে থাকেন তানজিদ। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিয়েছেন তিনে নামা সৌম্য। দু’জনে মিলে গড়েন পঞ্চাশ রানের জুটি। নিউজিল্যান্ড একাদশের দুই পেসারের বিপক্ষে শুরুতে খানিকটা ভুগছিলেন তানজিদ। তবে সময় যত গড়িয়েছে ব্যাটিংয়ে ততই ছন্দ খুঁজে পেয়েছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। সামর্থ্য সিংয়ে লেংথ ডেলিভারিতে লং অফের উপর দিয়ে ছক্কা মেরে ৪০ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন তরুণ এই ওপেনার।

দ্বিতীয় উইকেটে জুটির সেঞ্চুরি করেন তামিম-সৌম্য। তাদের দু’জনের জুটি ভাঙেন নিকিথ পেরেরা। বাঁহাতি এই স্পিনারের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে হাঁটু গেড়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে জামাল টডের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৫৮ রানের ইনিংসের খেলা তানজিদ।

নিজের খেলা তৃতীয় বলে পুল করে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মেরে রানের খাতা খুলেছিলেন সৌম্য সরকার। সেই সঙ্গে কিউই বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে দ্রুত রানও তুলতে থাকেন। দারুণ ব্যাটিংয়ে ৪৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সৌম্য। তামিমের মতো হাফ সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সৌম্যও। সামর্থ্য সিংয়ে অফ স্টাম্পের বাইরের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন ৫৬ বলে ৫৯ রানের ইনিংস খেলা বাঁহাতি এই ব্যাটার।

এদিকে পাঁচে নেমে রানের খাতাই খুলতে পারেননি তাওহিদ হৃদয়। দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর লিটন ও আফিফ হোসেন সামনে চ্যালেঞ্জ ছিল জুটি গড়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার। তবে সেটা করতে পারেননি তারা দু’জন। হৃদয়ের মতো এদিন ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন আফিফও। মাত্র ১০ রান করে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।

১৮৬ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর রিশাদকে সঙ্গে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন লিটন। রিশাদের সাথে গড়েন পঞ্চাশ পেরোনো জুটিও। সাবধানী ব্যাটিংয়ে নিজের হাফ সেঞ্চুরিও তুলে নেন লিটন। জারোড ম্যাকের বলে থার্ডম্যান দিয়ে চার মেরে ৫৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ডানহাতি এই ব্যাটার। যদিও হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পরের ওভারেই ফেরেন তিনি। সামর্থ্যের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে লং অন দিয়ে খেলতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন ৫৫ রান করা এই ব্যাটার।

লিটনকে দারুণভাবে সঙ্গ দিয়েছিলেন রিশাদ হোসেন। লিটন ফিরে গেলে দলকে এগিয়ে নেয়ার পুরো দায়িত্ব এসে পড়ে তার কাঁধে। দারুণ ব্যাটিংয়ে সেটা ভালোভাবেই পালন করেছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। সামর্থ্য সিংয়ে লেগ স্টাম্পের ওপর করা ডেলিভারিতে পুল করে ছক্কা মাত্র ৩৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন রিশাদ। শেষ পর্যন্ত ১১ চার ও ৪ ছক্কায় ৫৪ বলে ৮৭ রানের ইনিংস খেলে দলের রান ৩০০ পার করান তিনি। ৪৯.৫ ওভারে ৩৩৪ রান করে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

নিউজিল্যান্ড একাদশের পক্ষে সামার্থ সিং ৪ উইকেট নেন। ২ টি করে শিকার জেমস হার্টশর্ন ও জয়ি ফিল্ডের। ১ টি করে উইকেট পান নিকিত পেরেরা ও জ্যারড ম্যাকে।

জবাব দিতে নেমে নিউজিল্যান্ড একাদশ ৫.১ ওভারে ৩২ রান তুলতেই ২ উইকেট হারিয়ে বসে। ১৬.৪ ওভারে ৪র্থ উইকেট যখন হারায়, দলের রান তখন ৮০। ৮০ রানে ৪ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ড একাদশকে টেনে তোলে অধিনায়ক ভারত পোপলি ও স্বন্দ্বীপ প্যাটেলের জুটি। ৫ম উইকেটে তাঁরা দুজন যোগ করেন ১৫৬ রান।

ভারত পোপলি আক্ষেপে পোড়েন ৮ রানের। দারুণ খেলতে থাকা ভারত ৯০ বলে ১৩ চারে ৯২ রান করে আফিফ হোসেনের বলে বোল্ড হন। আফিফ ফেরান টাইগারদের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা আরেক ব্যাটার স্বন্দ্বীপ প্যাটেলকেও। ৭৭ বলে ১১ চার ও ২ ছয়ে ৮৯ রান করেন তিনি। এই দু’জনের বিদায়ের পর জয়ের কক্ষপথ থেকে ছিটকে যায় নিউজিল্যান্ড একাদশ। শেষমেশ ৪৯.২ ওভারে ৩০৮ রানে অলআউট হয় তারা। বাংলাদেশ ম্যাচ জেতে ২৬ রানের ব্যবধানে।

বাংলাদেশের পক্ষে ৩ টি করে উইকেট নেন রিশাদ হোসেন ও আফিফ হোসেন। ২ টি উইকেট নেন হাসান মাহমুদ। ১ টি করে শিকার তানজিম হাসান সাকিব ও রাকিবুল হাসানের।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply