নিলামে উঠছে মেসি-বার্সার চুক্তির সেই ন্যাপকিন পেপার

|

ছবি: সংগৃহীত

২৪ বছর আগের এক ডিসেম্বরের দুপুর। ক্লাবের ক্যাফেটেরিয়ায় লাঞ্চ করতে বসেছিলেন বার্সেলোনার ক্রীড়া পরিচালক কার্লোস রেক্সাস, এজেন্ট হোরাসিও গ্যাগিওলি আর ট্যালেন্ট হান্ট স্কাউট হোসে মারিয়া মিঙ্গুয়েলা। তাদের সঙ্গে মাত্র ১৩ বছর বয়সী রোজারিওর এক ছেলে, নাম লিওনেল আন্দ্রেস মেসি।

ঐ বছর সেপ্টেম্বরেই হয়েছিল মেসির ট্রায়াল। যেখানে মিঙ্গুয়েলাসহ সবার চোখ আটকে যায় অসাধারণ এক প্রতিভার। মেসির তখন গ্রোথ হরমোনে সমস্যা। মাসে অন্তত হাজার খানেক ডলার প্রয়োজন চিকিৎসায়, না হলে থেকে যেতে হবে বামন হয়ে। মেসির সন্ধান পেয়েও শুধুমাত্র চিকিৎসা খরচের কথা চিন্তা করে পিছিয়ে যায় বুয়েন্স আয়ার্সের বিখ্যাত ক্লাব রিভারপ্লেট।

বার্সেলোনার প্রেসিডেন্ট তখন হুয়ান গাসপার্ত। তিনি ভেবেছিলেন, তাড়াহুড়া করে ছেলেটির সঙ্গে চুক্তিতে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হবে। কিন্তু এজেন্ট গ্যাগিওলি প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে জানালেন, দ্রুত চুক্তি না হলে অন্য ক্লাবে মেসিকে নিয়ে যাবেন, এমনকি হতে পারে তা রিয়াল মাদ্রিদও। এই কথা শুনে তখনই চারকোনা এক টুকরো ন্যাপকিন কাগজ হাতে তুলে নেন রেক্সিস। নীল কালিতে লিখলেন বার্সার সাথে মেসির প্রথম চুক্তি।

চুক্তিতে লেখা ছিল, ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর, বার্সেলোনায় মেসার্স মিনগেলা, হোরাশিও আর বার্সার ক্রীড়া পরিচালক কার্লোস রেক্সাসের উপস্থিতিতে পূর্ণ দায়িত্বের সঙ্গে নির্দিষ্ট অঙ্কের ভিত্তিতে লিওনেল মেসিকে সই করানোর ব্যাপারে একমত হওয়া গেছে। সেই সাথে তৈরি হল স্প্যানিশ ক্লাবটির আধুনিক ইতিহাস পাল্টে দেয়া চারকোনা এক টুকরো ন্যাপকিন।

বার্সা-মেসির সম্পর্কের সেই বিখ্যাত ন্যাপকিন পেপারের দলিল এবার উঠতে যাচ্ছে নিলামে। আগামী মার্চে ব্রিটিশ অকশন হাউস বোনহামসের মাধ্যমে এটির নিলাম হবে। যার ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ পাউন্ড। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৪ কোটি ১৯ লাখ।

নিলাম প্রসঙ্গে বোনহামসের পাণ্ডুলিপি বিভাগের প্রধান ইয়ান এহলিং বলেন, আমার নিলাম পরিচালনা করা জিনিসগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে রোমাঞ্চকর। হ্যাঁ, এটি ন্যাপকিন পেপার। কিন্তু এটা সেই ন্যাপকিন পেপার, যেটার মাধ্যমে লিওনেল মেসির ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল। এটা বার্সার ভবিষ্যৎ আর মেসির জীবন পরিবর্তন করে দিয়েছিল। যা ফুটবলে বিশ্বের কোটি সমর্থককে চমৎকার মুহূর্ত উপহার দিয়েছে।

মেসিকে দেয়া বার্সার পক্ষ থেকে প্রথম কমিটমেন্টের সেই ঐতিহাসিক ন্যাপকিন পেপারটি এতদিন সযত্নে আগলে রেখেছিলেন গ্যাগিওলি। অনেকেই লাখ লাখ ডলারে এটি কিনতে চাইলেও, গ্যাগিওলি চেয়েছিলেন এটিকে বার্সেলোনার জাদুঘরে সংরক্ষণ করতে। তবে শেষপর্যন্ত এবার নিলামেই উঠতে যাচ্ছে মেসি-বার্সার ন্যাপকিন পেপার।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply