রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর কনসার্ট হলে বন্দুকধারীদের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩ জনে। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় তদন্ত কর্তৃপক্ষ শনিবার (২৩ মার্চ) এ তথ্য জানিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে। যেটিকে দেশটির সরকার একটি ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
তবে রাশিয়ায় রাজধানীতে আক্রমণ নতুন কিছু নয়। গত ২৫ বছরে দেশটির এই শহর একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছে। এতে প্রাণ হারিয়েছে শত শত মানুষ। আসুন দেখে নেই গত দুই যুগে মস্কোতে যত হামলা হয়েছে তার ধারাবাহিক ঘটনাপ্রবাহ।
১৯৯৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ-পূর্ব মস্কোর একটি আটতলা আবাসিক ভবনে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে প্রাণ হারায় ১১৮ জন মানুষ। দেশটি এই হামলার জন্য দায়ী করে উত্তর ককেশাস প্রজাতন্ত্র চেচনিয়া থেকে আসা মুসলিম বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের।
মস্কোর সেই অ্যাপার্টমেন্টে হামলা ছাড়াও সেসময় পরবর্তী ১৫ দিনে আরও কয়েকটি ধারাবাহিক হামলায় সর্বমোট ২৯৩ জন প্রাণ হারায়।
২০০২ সালের ২৩ অক্টোবর মস্কোর একটি থিয়েটারে গানের অনুষ্ঠান চলাকালে ৮০০ জনকে জিম্মি করে সন্ত্রাসীরা। দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে জিম্মিকারী চেচেন বিদ্রোহী গোষ্ঠির সেই সংঘর্ষ স্থায়ী হয়েছিল দুই দিন তিন রাত। এতে ১৩০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়।
২০০৩ সালের ৫ জুলাই। আবারও একটি রক কনসার্টের ময়দান। এবার আক্রমণ হয় দুই চেচেন বিচ্ছিন্নতাবাদী মহিলার আত্মঘাতী বোমা হামলায়। মস্কোর কাছে তুশিনো এয়ারফিল্ডে এঘটনা ঘটে। ১৫ জন মারা যায় সেই কনসার্টের মাঠে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল ২০ হাজার মানুষ।
২০০৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মস্কোর একটি মেট্রোতে বোমা বিস্ফোরিত হয়। ঘটনার নেপথ্যে আগের মতোই চেচেন বিদ্রোহীরা। এবার একটি সাবওয়েতে বোমা হামলায় নিহত হয় ৪১ জন মানুষ।
২০১০ সালের ২৯ মার্চ দুজন নারী আত্মঘাতী হামলাকারী মস্কোর একটি সাবওয়েতে হামলা চালালে নিহত হয় ৪০ জন। এটি হয়েছিল মস্কোর লুবিয়াঙ্কা স্টেশনে যার ঠিক পাশেই অবস্থিত রুশ গোয়েন্দা সদর দপ্তর। বরাবরের মতো এ হামলাতেও জড়িত ছিলেন চেচেন বিদ্রোহীরা। হামলার দায় স্বীকার করেন চেচেন নেতা দকু উমারভ।
২০১১ সালের ২৪ জানুয়ারি মস্কোর ডোমোডেডোভো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে। এতে প্রাণ হারায় ৩৭ জন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ থেকে এখন পর্যন্ত সবগুলো হামলা মিলিয়ে শত শত মানুষ প্রাণ হারায় যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। এদের মাঝে কিছুই বিদেশিও ছিল।
/এমএইচআর
Leave a reply