ইরানের ইসফাহানকে কেন টার্গেট করলো ইসরায়েল?

|

ইরানের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামলা হয়েছে দেশটির ইসফাহান শহরের বিমানবন্দরের কাছে। ইসফাহান শহরে শোনা গেছে বিস্ফোরণের শব্দ। প্রশ্ন উঠেছে– অন্য কোথাও আক্রমণ না করে ইসফাহান শহরটিকেই কেন টার্গেট করলো তেল আবিব?

মূলত ইসফাহান শহরটি ইরানের ঠিক কেন্দ্রে অবস্থিত। রাজধানী তেহরান থেকে প্রদেশটি দূরত্ব সাড়ে তিনশ কিলোমিটার। এই শহরে পারমাণবিক স্থাপনাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। দেশটির অন্যতম বড় সামরিক বিমান ঘাঁটিও রয়েছে ইসফাহানে।

প্রদেশের নাতানজ শহরটিকে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দু বলা চলে। তবে ‘নির্ভরযোগ্য সূত্র’-এর কথা উল্লেখ করে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দাবি করেছে, পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি নিরাপদে আছে।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ইরানের এই শহরটিকে একটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ইসফাহানে সামরিক গবেষণা, উন্নয়নের স্থাপনা ও সামরিক ঘাঁটিসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো রয়েছে।

এছাড়া, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির কেন্দ্রস্থল নাতাঞ্জসহ ইসফাহান প্রদেশে বেশ কয়েকটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনা অবস্থিত। এটি ইরানের সর্ববৃহৎ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র।

ম্যাপে ইরানের ইসফাহান

আল জাজিরা বলছে, ইসফাহান শহরটি পারমাণবিক স্থাপনা এবং সামরিক বিমানঘাঁটির আবাসস্থল। এছাড়া, এখানে ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনের বিশাল কমপ্লেক্সও রয়েছে।

সুতরাং এটি একটি সম্ভাব্য সাইট যা ইসরায়েল আঘাত করবে কারণ ইসরায়েলিদের সবচেয়ে বড় ভয় আজকে অব্যাহত ক্ষেপণাস্ত্র নয় বরং আগামীকাল একটি পারমাণবিক সক্ষমতা।”

ইসফাহানে হামলা সম্পর্কে বিবিসির সঙ্গে কথা বলেছেন সাবেক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক কিমিট। তিনি বলেন, ইসফাহান অনেকাংশে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। প্রশিক্ষণ, গবেষণার দিক থেকে এটি গুরুত্বপূর্ণ। কেউ কেউ বলেন, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতার বিকাশ ঘটেছে এখানে।

তিনি যোগ করেন, এটিই সম্ভাব্য স্থান, যেখানে ইসরায়েল আঘাত করবে। কারণ, ইসরায়েলিদের বড় ভয়– আজকের অব্যাহত ক্ষেপণাস্ত্র নয় বরং আগামীকালের ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা।

মার্কিন কর্মকর্তারা শুক্রবার দেশটির গণমাধ্যম সিবিএসকে বলেছেন, ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে আঘাত করেছে। তবে হামলার মাত্রা, সঠিক লক্ষ্যবস্তু এবং তা সেই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

এদিকে, ইসরায়েলের হামলার খবরের মধ্যে ইরান তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করেছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা বলছে, ইরান বেশ কয়েকটি প্রদেশে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যাটারি নিক্ষেপ করেছে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে ইসরায়েলে হামলা চালায় ইরান। ইরানের সেই হামলার জবাব দেয়ার ঘোষণা ইসরায়েল আগেই দিয়েছিল এবং এরপর থেকে ইরান উচ্চ সতর্কতায় ছিল। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় কয়েকটি দেশ ইসরায়েলকে পাল্টা হামলা না চালানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছিল। অবশেষে তা উপেক্ষা করে আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভোরে ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল।

/এএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply