শেষ চারের ‘চোকার’ তকমা থেকে কি বের হবে দক্ষিণ আফ্রিকা?

|

দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে আইসিসি ইভেন্টে নকআউট পর্বের গল্পটা বেশ পুরোনো। এমনকি একই গল্প পুনরাবৃত্তি হতে দেখা গেছে বারবার। সারা আসরে দুর্দান্ত খেলে নকআউটে বিশেষ করে সেমিফাইনাল এলেই যেন খেই হারিয়ে ফেলে প্রোটিয়ারা। এজন্য বিশ্ব ক্রিকেটে তাদের একটি বিশেষ বিশেষণে অভিহিত করা হয়ে থাকে। এই ‘চোক’ করার বারংবারের অভ্যাস থেকে কি এবার বের হতে পারবে তারা?

অনেক আগের আইসিসি ইভেন্টকে পাশ কাটিয়ে বর্তমান শতাব্দির গত একযুগে আয়োজিত টুর্নামেন্টের রেকর্ড দেখলেও একই ঘটনা দেখা যায়। ২০১১ বিশ্বকাপে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে মিরপুরে অপর গ্রুপের চতুর্থ দলের কাছে ধরাশয়ী হয়েছিল তারা। একই ভেন্যুতে ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালসহ ২০১৫ বিশ্বকাপে কিউইদের বিপক্ষে ইডেন পার্কেও একই গল্পের পুনরাবৃত্তি করেছে তারা। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ চারেও উঠেছে প্রোটিয়ারা। এবার ত্রিনিদাদে সেই বৃত্ত থেকে বের হবার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী প্রোটিয়া কোচ রব ওয়াল্টার।

ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে সেই একই গল্প বললেন প্রোটিয়া কোচ। অবশ্য গল্প না, এবার ইতিবাচক শঙ্কার কথাই জানালেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে কম সংখ্যক সাংবাদিক উপস্থিত থাকায় এর রেশ টেনে প্রোটিয়া কোচ বলেন, এই কক্ষ তো পুরোপুরিই ফাঁকা, এটা একটা ভালো লক্ষণ, আমার মনে হয়।

এর কারণ অবশ্য অনুমেয়। সংবাদকর্মী কম থাকা মানে আগ্রহ-কৌতূহল কম, তার মানে চাপও কম। এই পর্যায়ে এসে তো প্রতিপক্ষ দল যতটা, দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য ততটাই বড় প্রতিপক্ষ এই চাপ। নকআউট ম্যাচে চাপের সময়ে বারবার ভেঙে পড়ে বলেই তো ‘চোকার’ তকমা গায়ে লেগে গেছে তাদের। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়েও ফেভারিট হয়েই নামবে তারা আফগানিস্তানের বিপক্ষে।

প্রোটিয়া কোচ বলেন, সেমিফাইনালের মতো ম্যাচের ক্ষেত্রে এক ধরনের বাড়তি উত্তেজনা সবসময়ই সুস্পষ্ট হয়ে ফুটে ওঠে। উদ্বেগ ও রোমাঞ্চের মিশ্র একটা অনুভূতি কাজ করে এবং এই পর্যায় পর্যন্ত আসতে পারলে সবার মধ্যেই এরকম অনুভূতি কাজ করেই। ব্যাপারটি হলো, এটিকে স্রেফ আলিঙ্গন করা এবং এরপর উপলব্ধি করা যে, এটা কীভাবে সামলানো যাবে। আমাদের চাওয়া, এসব সামলেই আগামীকাল ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোয় সেরা ক্রিকেট খেলা।

চলতি আসরে সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচটি এক প্রকারের নকআউটই ছিল, অঘোষিত কোয়ার্টার ফাইনালের রূপ নিয়েছিল তা। ওয়াল্টার তাই আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠেই জানিয়ে দিলেন, অতীতের ভূত এই দলে নেই। দুঃসহ অতীতের ছায়া থেকে বেরিয়ে এই আসরের স্বস্তির আবেশ মেখেই এগিয়ে যেতে চান তিনি।

ওয়াল্টার বলেন, এই দক্ষিণ আফ্রিকা তো আলাদা দল। আমাদের যা কিছু আছে, সেসবই শুধু আমাদের। আমরা তাকাব আমাদের নিকট অতীতের পারফরম্যান্সে, যেখানে আমরা বারবার উতরে যেতে পেরেছি। সেমিতেও আমরা সেরকমই ভাবছি।

উল্লেখ্য, একবার আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ফাইনাল খেললেও ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে কখনও খেলেনি প্রোটিয়ারা। ১৯৯৮ সালে ঢাকায় একবারই আইসিসি ইভেন্টের কোনো শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে পেরেছিল তারা।

/এমএইচআর


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply