মুখোমুখি হয়ে কী বললেন বাইডেন-ট্রাম্প

|

চার বছর পর আবারও টেলিভিশন বিতর্কে মুখোমুখি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পে। প্রথা ভেঙে করমর্দন না করেই বিতর্ক শুরু করেন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী।

যুক্তরাজ্য ভিত্তিক গণমাধ্যম সিএনএনের আটলান্টা স্টুডিওতে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাত ৯টায় আয়োজিত বিতর্কে ট্রাম্প ৪০ মিনিট ১২ সেকেন্ড কথা বলেছেন। বাইডেন যুক্তি উপস্থাপন করেছেন ৩৫ মিনিট ৪১ সেকেন্ড। একজন যখন কথা বলেছেন, তখন বন্ধ ছিল অন্যজনের মাইক্রোফোন।

অভিবাসন ইস্যুতে পরস্পরের সমালোচনা করেন ট্রাম্প ও বাইডেন। সাবেক প্রেসিডেন্টের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রকে নরক বানিয়েছেন বাইডেন আর বাইডেনের পাল্টা যুক্তি, ট্রাম্পের আমলের চেয়ে এখন সীমান্ত পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো অবস্থানে রয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, আমাদের অনেক লোককে বের করে দিতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব তাদের বিতাড়িত করতে হবে। কারণ, তারা আমাদের দেশকে ধ্বংস করে চলেছে। তার (বাইডেনের) দুর্বল সীমান্ত নীতির কারণে দেশে অপরাধ বেড়েছে।

অন্যদিকে বাইডেন বলেন, আমার সময় সীমান্ত পরিস্থতিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। তার (ট্রাম্পের) সময়ের চেয়ে বর্তমানে ৪০ শতাংশ কম মানুষ সীমান্ত পার হয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশ করে।

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ইস্যুতে দুই প্রার্থীকে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। বাইডেনের দাবি, হামাসের কারণেই দীর্ঘ হচ্ছে যুদ্ধ। নিজেদের ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় সমর্থক দাবিও করেন তিনি। এদিকে, ইসরায়েলে হামাসের হামলার জন্য বাইডেনের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন ট্রাম্প।

এ প্রসঙ্গে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেন বলেন, ইরান যখন ইসরায়েলে আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, তখন বিশ্বকে ইরানের বিরুদ্ধে আমি সুসংগঠিত করেছি। সে হামলায় ইসরায়েলে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আমরা ইসরায়েলকে রক্ষা করেছি। আমরাই তাদের সবচেয়ে বড় সমর্থক।

অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে হামাস ইসরায়েলে হামলা চালাতে পারতো না। নেতানিয়াহুর উচিত তার কাজ শেষ করা এবং তাকে সেটি করতে দেয়া উচিত। কিন্তু বাইডেন ফিলিস্তিনিদের মতো আচরণ করছেন।

আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতেও বাইডেনকে তুলোধুনো করেছেন ট্রাম্প। তার দাবি, বাইডেন প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও বাইডেনের দাবি, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তার নেতৃত্বে বর্তমানে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে ওয়াশিংটন।

ট্রাম্প বলেন, আমরা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের খুবই কাছাকাছি রয়েছি। কিম জং উন, শি জিনপিং, পুতিন কেউই তাকে সম্মান করে না, ভয় পায় না। এই ভদ্রলোকই বিশ্বকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছেন।

অন্যদিকে বাইডেন বলেন, পুতিন একজন যুদ্ধাপরাধী। যিনি হাজার হাজার মানুষকে মেরেছেন। তিনি আবারও সোভিয়েত সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধার করতে চান। তিনি শান্তি চান না। আর তার (ট্রাম্পের) ধারণা, তিনি চাইলেই পুতিনকে থামিয়ে দিতে পারবেন?

দেশের অর্থনীতি, সামাজিক নিরাপত্তা, চাইল্ড কেয়ার, কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা এবং গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ইস্যুতে তর্কে জড়ান দুই প্রার্থী। বিভিন্ন জনমত জরিপ বলছে, বেশিরভাগ মার্কিনি মনে করেন, বিতর্কে জিতেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

উল্লেখ্য, দুজনের মধ্যকার দ্বিতীয় ও শেষ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর।

/এএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply