কালাম চেয়ারম্যানকে নিয়ে ওই নারীর বিবৃতিতে যা লেখা আছে

|

নির্বাচনে জয়ের পর শুভেচ্ছা গ্রহণ করার সময় এক মুরং নারীকে জড়িয়ে ধরা ছবি ফেসবুকে প্রকাশের পর রোববার থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোপের মুখে বান্দরবনের আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম। অনেকে যৌন হেনস্থার অভিযোগও এনেছেন তার বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে সোমবার বিকালে সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার ব্যাখ্যা দেন রুমপাও মুরং নামের ওই নারী। তার স্বাক্ষরিত বক্তব্যটি যমুনা টেলিভিশনের হাতে এসে পৌঁছেছে। পাঠকের জন্য তা নিম্নে হুবহু তুলে ধরা হলো।

“প্রিয় সাংবাদিক ভায়েরা,

আপনারা জানেন গত পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন/২০১৯ আলীকদম উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ নির্বাচন হয়। এতে আমি ‍রুমপাও মুরং এবং আমার পরিবারের অপরাপর সদস্যগণ স্বতন্ত্র প্রার্থী জনাব আবুল কালামের দোয়াত কলম মার্কার সমর্থনে প্রচার প্রচারনা চালিয়েছি। নির্বাচনে আমি জনাব আবুল কালামের দোয়াত কলম মার্কার একজন একনিষ্ঠ কর্মী ছিলাম।

জনাব আবুল কালামের সাথে আমাদের পরিবারের দীর্ঘদিনের একটি সম্পর্ক আছে। আমরা তাকে অসাম্প্রদায়িক ও সৎ চরিত্রবান ব্যক্তি হিসেবে জানি। তাঁর পিতাও তাঁর মত সকল সম্প্রদায়ের প্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর আমরা পাড়াবাসী গত ২৩ মার্চ দুপুর ১২টার দিকে দিকে জনাব আবুল কালামকে নিজ পাড়ায় সংবর্ধনা প্রদান করি।

সংবর্ধনা চলাকালীন আমি অন্যান্যদের ন্যায় চেয়ারম্যানকে মাল্যদান করার পর আবেগপ্রবণ হয়ে খুশিতে কান্না করে ফেলি এবং এক পর্যায়ে মাথাঘুরে পড়ে যাওয়ার সময় চেয়ারম্যান মহোদয় আমাকে ধরে না ফেললে আমি গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হতাম। পাশাপাশি চেয়ারম্যান মহোদয় আমার কান্না থামানোর জন্য আমাকে সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করেন।

এ সময় আমার পরিবারের সদস্য মা, বাবা ভাই সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও কয়েক পাড়ার দুইশতাধিক লোকজন সংবর্ধনা স্থলে উপস্থিত ছিলেন। চেয়ারম্যান মহোদয়কে আমি ও আমার ভায়েরা আপন বড় ভায়ের মতো শ্রদ্ধা করি, তিনিও আমাদের ছোট ভাই-বোনের মতো জানেন। তাহার মধ্যে আমি বা আমরা কখনো খারাপ প্রবৃত্তি দেখি নাই এবং তিনি এ ধরনের লোক নন।

আমি জানতে পেরেছি উক্ত অনুষ্ঠানে আমার ও চেয়ারম্যান জনাব আবুল কালামের ছবিসহ উক্ত অনুষ্ঠানের কিছু ছবি চেয়াম্যান মহোদয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের আইডি খেকে পোস্ট করেন। উক্ত ছবিকে কেন্দ্র করে প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের কিছু লোকজন ও প্রতিক্রিয়াশীল চক্র আমার ছবিগুলোকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিকৃতভাবে মন্তব্য করেন যা আমার আত্মসম্মানে চরম আঘাত লাগে।

আমি ও আমার পরিবার চেয়ারম্যান মহোদয়কে আমাদের পরিবারের সদস্য হিসেবে জানি। আমি তার একজন ভক্তও বটে। আমার ছবিগুলো ভাইরাল করার পূর্বে অথবা মিডিয়াতে প্রকাশের পূর্বে আমার ও আমার পরিবারের বক্তব্য নেয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা না করে একটি সুন্দর ভ্রাতৃত্ববোধকে পুরো পার্বত্য এলাকায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টির হীন উদ্দেশ্যে উক্ত ছবিগুলো ভাইরাল করা হয়।

সাধারণত ধর্মান্ধ, প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠি এ ধরনের সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টি করে তৃপ্তি পায়। আমি ও আমার পরিবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলছি এ ধরনের অপপ্রচার যারা করে তারা এলাকার শান্তি চায়না, সহাবস্থান চায়না। এটা দু:খজনক এবং আমার জন্য মানহানিকর। আমি ভাইরালকারীদের বিকৃত মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহারের আবেদন জানাচ্ছি।

আমি ও আমার পরিবারের সদস্যগণ আলীকদম উপজেলা পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব আবুল কালাম এবং তাঁর পরিবারের দীর্ঘায়ু কামনা করছি।”

 

যমুনা অনলাইন/ইএ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply