‘হুজুর আপনি এগুলো কি বলছেন, আপনি আমার বাবার মতো’

|

যৌন হয়রানির পর পুলিশের কাছে দেয়া নুসরাত জাহান রাফির একটা জবানবন্দি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করছেন নুসরাত।

জানা যায়, প্রথম বর্ষ থেকেই নুসরাতকে যৌন হয়রানি করতো অধ্যক্ষ। এমনকি পিওনকে দিয়ে রুমে ডেকে হাত ধরে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। প্রায়ই ডেকে নিয়ে অশোভন কথা বলতেন তিনি।

প্রথম বর্ষে ভর্তির কিছুদিন পরই অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা যৌন হয়রানি করেন এমন উল্লেখ করে নুসরাত জবানবন্দিতে বলেন, মুখটা খুলো, আমি খুলি নাই, তিনি বললেন তোমাকে আমার ভালো লাগে, আমি বলললাম হুজুর আপনি এগুলো কি বলছেন আপনি আমার বাবার সমতুল্য।

নুসরাত আরও বলেন অধ্যক্ষ তাকে বলেন, তোকে কেউ বিশ্বাস করবে না, তোর লাইফে আগে একটা কলঙ্ক আছে তুই এখন আমার সাথে থাক।

নুসরাত কেঁদে কেঁদে জবানবন্দি দিলে পুলিশ বলে, কেঁদো না কাঁদলে আমি বুঝবো কি করে। বোকা মেয়ে তোমাকে বলতে হবে তো। কাঁদতেছো কেনো। এমন কিছু হয়নি যে তোমাকে এখনই কাঁদতে হবে।

জবানবন্দিতে জানা যায়, পিওনের মাধ্যেমে রুমে ডাকতো। একদিন দুই বান্ধবীদের নিয়ে গেলেও তাদের ডুকতে দেয়নি, পিওন জানায় অধ্যক্ষ গুরুত্বপূর্ণ কথা বলবে। এরপর রুমে গেলে হাত ধরে অধ্যক্ষ।

ভিডিও শেষে দেখা যায় পুলিশের কাছে কেঁদে কেঁদে নুসরাত বলে আমি আর বাঁচবো না স্যার।

এর আগে ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসাছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে এমন সংবাদে তিনি ছাদে যান। সেখানে বোরকাপরা ৪-৫ জন তাকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়।

অস্বীকৃতি জানালে তারা রাফির গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সোমবার রাতে অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন অগ্নিদগ্ধ রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।

এর আগে ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানি করেন অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। ওই দিনই অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাকে আটক করে পুলিশ। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply