চিকিৎসকের মৃত্যুর পরেও প্যাথলজি রিপোর্টে তার স্বাক্ষর!

|

চিকিৎসকের মৃত্যুর পরেও প্যাথলজি রিপোর্টে তার স্বাক্ষর!

বরিশাল ব্যুরো:

দীর্ঘ তিন মাস রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গেল ১৯ জুলাই মারা গেছেন
বরিশালের চিকিৎসক গাজী আমানুল্লাহ খান। অথচ মৃত এই চিকিৎসকের স্বাক্ষরে প্যাথলজি রিপোর্ট তৈরি হচ্ছিল একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। এ ঘটনায় বরিশাল নগরীর জর্ডান রোড এলাকার ‘দি সেন্ট্রাল মেডিকেল সার্ভিসেস’ নামের ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সাথে ডায়গস্টিক সেন্টারের ২ মালিককে ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

এছাড়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এক চিকিৎসক ভুয়া পদবী ব্যবহার কারায় তাকেও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন সেন্ট্রাল মেডিকেল সার্ভিসেস এর মালিক জসিম উদ্দিন মিলন, এ কে চৌধুরী ও ভুয়া পদবী ব্যবহারকারী চিকিৎসক নূর এ সরোয়ার সৈকত।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক বরিশাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান
জানান, গোপন খবরের ভিত্তিতে সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ও র‌্যাব সদস্যদের নিয়ে বুধবার রাতে
‘দি সেন্ট্রাল মেডিকেল সার্ভিসেস’ নামের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালানো হয়। এ সময় দেখা
যায় চিকিৎসক গাজী আমানুল্লাহ খানের স্বাক্ষরে প্যাথলজি রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। অথচ দীর্ঘ
দিন অসুস্থ থাকার পর ১৯ জুলাই ঢাকায় মারা গেছেন তিনি। এছাড়া কয়েক দিন আগে করোনায়
আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া চিকিৎসক এমদাদুল্লাহ খানের নামও ব্যবহার করা হয়েছে ডায়াগনস্টিক
সেন্টারের সাইনবোর্ডে।

অপরাধ স্বীকার করে নেয়ায় প্রতারণার অভিযোগে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক জসিম উদ্দিন মিলন
ও এ কে চৌধুরীকে ৬ মাস করে কারাদণ্ড দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক নূর এ সরোয়ার সৈকত নিজেকে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে জনগণের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন। এই অপরাধে তাকেও ৬ মাসের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সাথে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান।

এদিকে, দি সেন্ট্রাল মেডিকেল সার্ভিসেস নামের এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক পক্ষের সাথে
দালালদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রশাসনের অভিযান চলাকালে সেখানে থাকা পটুয়াখালীর বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, তার বাবার উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে আসলে দালালের খপ্পরে পরেন তিনি। নামকরা চিকিৎসকের কথা বলে তাকে এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে আসে এক দালাল। একই অভিযোগ ভোলার খাদিজা বেগমের। তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকের ফি ৭শ’ টাকা হলেও তার কাছ থেকে এক হাজার টাকা নিয়ে বাকি ৩শ’ টাকা ফেরত দেয়নি ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply