দেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৭১ হাজার কোটি টাকা পাচার

|

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে পাচার হয় ৭১ হাজার কোটি টাকার বেশি। এমন বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান, গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই)।

প্রতিবেদনটিতে ১৩৪ উন্নয়নশীল দেশের গত ৮ বছরের অর্থপাচারের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে কেবল ২০১৫ সালেই পাচার হয়েছে এক লাখ কোটি টাকার বেশি। জিএফআই’র কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেছে যমুনা আইডেস্ক। তারা জানিয়েছেন, গত তিন বছর জাতিসংঘকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের তথ্যই দিচ্ছে না বাংলাদেশ।

জিএফআই প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে অর্থপাচারের চুলচেরা বিশ্লেষণ তুলে ধরে। এক দশক ধরে কাজটি করছে তারা। বুধবার সবশেষ যে প্রতিবেদন প্রকাশ হলো, তাতে ১৩৪ উন্নয়নশীল দেশের ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তথ্য ওঠে এসেছে।

জিএফআই বলছে, উন্নয়নশীল দেশ থেকে বেশি অর্থ পাচার হয়, আমদানি-রফতানি পণ্যের প্রকৃত দাম গোপন করে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ২০১৫ সালে বিদেশে পণ্য কেনা-বেচার যে খতিয়ান দিয়েছেন, তার ১৮ শতাংশই ভুয়া। আমদানিতে বেশি আর রপ্তানিতে কম দেখিয়ে ওই বছর গায়েব করা হয়েছে ১ হাজার ১৮৭ কোটি ডলার যা, ১ লাখ কোটি টাকার বেশি।

জিএফআই’র জেষ্ঠ্য অর্থনীতিবিদ রিক রডেন বলেন, আমদানির সময় ভাউচারে দাম বেশি দেখিয়ে এবং রফতানির সময় দাম কমানোর মাধ্যমে মুলত অর্থপাচার করা হয়। এভাবে অর্থ পাচারের পরিমাণ সময়ের সাথে সাথে বেড়েছে বাংলাদেশে।

জিএফআই’র হিসাবে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে ২০০৯ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ৬ বছরে, মোট ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। স্থানীয় মুদ্রায় যা ৪ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকার বেশি। এ সময়ে বছরে গড়ে পাচার হয়েছে ৮২৭ কোটি ডলার বা ৭১ হাজার কোটি টাকা। বছর বছর বেড়েছে কাগজে-কলমের হিসাব আর প্রকৃত আমদানি-রপ্তানির অসঙ্গতি।

এবার জিএফআই ২০১৮ সাল পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করেছে। করোনা মহামারীর কারণে পরবর্তী বছরগুলোর তথ্য প্রকাশিত হয়নি। তবে, বাংলাদেশের তথ্য আছে ২০১৫ পর্যন্ত। তাদের দাবি, জাতিসংঘকে টানা তিন বছর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের তথ্য দেয়নি বাংলাদেশ।

রিক রডেন আরও বলেন, এবারের প্রতিবেদনে ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থপাচারের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘকে তিন বছর তথ্য না দেয়ায় এরপরের বছরগুলোতে অর্থপাচারের কি অবস্থা সেটি আমরা জানি না।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সবচেয়ে বেশি অর্থপাচার করা হয়েছে চীন থেকে। এরপরই আছে পোল্যান্ড, মেক্সিকো, ভারত ও রাশিয়া।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply