বিশ্বকাপের আলোর নিচে ৩ বছর ছুটি না পাওয়া বাংলাদেশি শ্রমিকদের গল্প

|

ছবি: সংগৃহীত

ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ উপলক্ষে বিলাসবহুল সব স্টেডিয়াম তৈরি করেছে কাতার। কিন্তু সম্প্রতি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের করা এক প্রতিবেদনে উঠে আসে শ্রমিকদের ত্যাগের গল্প। বিশ্বকাপের আলোর নিচে চাপা পড়ে থাকা অনেক গল্প উঠে আসে অন্ধকার থেকে; সেখানে জানা যায় এমন বাংলাদেশি শ্রমিকদের কথা যারা প্রতিদিন প্রায় ১২ ঘণ্টা কাজ করার সাথে ৩ বছর ধরে কোনো সাপ্তাহিক ছুটি পাননি।

ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ উপলক্ষে কাতারের বিলাসবহুল স্টেডিয়ামগুলো পৌঁছেছে প্রশংসার চরম শিখরে। কিন্তু হাজারো ত্যাগের গল্পে দাঁড়িয়ে আছে এই অপূর্ব নির্মাণগুলো। সম্প্রতি বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের করা এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কাতার বিশ্বকাপকে ঘিরে কাজ করা শ্রমিকদের জীবন যাপন ও আত্মত্যাগের গল্প।

একজন কাতার অভিবাসী শ্রমিক নিজের প্রথম বছর বর্ণনা করতে গিয়ে জানান, সেখানে যোগ্যরাই টিকে থাকে। ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ কাতারে আয়োজনের শুরু থেকেই ইউরোপীয় অঞ্চলে চলে এ নিয়ে নানা সমালোচনা। কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে অবশেষে কাতারেই গড়াচ্ছে ২০২২ বিশ্বকাপ আসর। সে জন্য বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক সরবরাহ করে দেশটিতে। কিন্তু শ্রম আইনের কোনো চুক্তি ছাড়াই নিয়োগ পায় প্রবাসীরা।

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে জানা যায়, সেখানে শ্রমিকরা দিনে প্রায় ১২ ঘণ্টার উপরে কাজ করেন এবং তারা পান না কোনো সাপ্তাহিক ছুটি। এমন শ্রমিকও আছেন যারা ৩ বছর ধরে কোনো ছুটি কাটাননি। যারা জোরপূর্বক ছুটি কাটিয়েছেন তাদের জন্য পরবর্তীতে শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সাথে কেটে নেয়া হয়েছে তাদের বেতন।

গত বছর দ্য গার্ডিয়ানের করা এক প্রতিবেদনে এটিকে ‘আধুনিক দাসত্ব’ বলে আখ্যা দেয়া হয়। সেই সাথে প্রতিবেদনটিতে জানা যায়, বিশ্বকাপের স্বত্ব পাওয়ার পর থেকে কাতারে সাড়ে ৬ হাজারেরও বেশি শ্রমিক মারা যান। এর বেশিরভাগই ছিল বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার। ধারণা করা হচ্ছে, মৃত্যুর আসল সংখ্যাটা এর চেয়েও বেশি।

পৃথিবীতে বর্তমান উৎকর্ষের পেছনে অনেকটা আড়াল হয়েই রয়ে যায় শত সহস্র ত্যাগের গল্প। হাজারো এই ত্যাগ গুলো হয়তো সহজেই মিশে যাবে তারকাখচিত মাঠে ও সমর্থকদের আনন্দের চিৎকারে।

এম ই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply