বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ, আ. লীগ নেতা গ্রেফতার

|

স্টাফ করেসপনডেন্ট, রংপুর:

রংপুরের পীরগঞ্জ শানেরহাট পাহাড়পুর গ্রামে হাইকোর্টের নির্দেশে সেচ পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে গেলে তাতে বাধা দেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ। এতে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ বাধে। আহত হয় নারী ও পুলিশসহ অন্তত ২০ জন। ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মাস্টার, তার স্ত্রী ও বোনসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও পল্লী বিদ্যুৎ সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সাল থেকে মিজানুর রহমান মাস্টার পাহাড়পুর মৌজায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের একটি গভীর নলকূপ অপারেটর হিসেবে পরিচালনা করে আসছে। সম্প্রতি একই মৌজায় নিজস্ব জমিতে কাজী পাড়া গ্রামের হামিদ সরদারের ছেলে রশিদ সরদার সেচ পাম্প স্থাপনে উপজেলা সেচ কমিটির নিকট আবেদন করে। সেচ কমিটি তদন্তের পর রশিদ মিয়াকে গভীর নলকূপ স্থাপনে অনুমতি প্রদান করে। ওই ঘটনা মিজানুর রহমান জানতে পেরে অল্প দূরত্বে ২টি গভীর নলকূপ পরিচালনা সম্ভব নয় মর্মে রশিদ মিয়ার অনুমোদন বাতিলে সেচ কমিটির নিকট আবেদন করে। তখন সেচ কমিটি রশিদ মিয়ার গভীর নলকূপ স্থাপনের কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করে। দীর্ঘ কয়েক মাসে এই ঘটনার সুরাহা না হওয়ায় উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন রশিদ মিয়া। মহামান্য হাইকোর্ট ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রশিদ মিয়ার সেচ পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগের নির্দেশ প্রদান করেন।

রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ডিজিএমে এ বিষয়ে পুলিশী সহায়তা চেয়ে ৮ এপ্রিল পীরগঞ্জ থানায় লিখিত আবেদন করেন রশিদ। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার (১১ মে) বিকেলে পুলিশ ও পল্লী বিদ্যুতের লোকজন ঘটনাস্থলে যায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার জন্য। এ সময় শানেরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মাস্টার, তার পরিবারের লোকজন ও আত্মীয়-স্বজন বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের সাথে ধাক্কাধাক্কি, ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে ২ নারী পুলিশ সদস্য গোলেনুর ও জান্নাতুল আহত হলে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। বাঁধে সংঘর্ষ। মিজান মাস্টারের লোকজনও ইটপাটকেল ছোড়ে পুলিশ এর উপর।

সংঘর্ষে নায়েক ফারুক উজ জামান, কনস্টেবল তারেক, কামরুল, আরিফুলসহ ৬ পুলিশ এবং মিজান মাস্টারের পক্ষের অন্তত ১৫ জন জন আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে এ সময় মিজানুর রহমান মাস্টার (৩৬), তার স্ত্রী বিজলী (৩২), কন্যা মীম আক্তার (১৬), বোন বড় পাহাড়পুর গ্রামের মোনাজ উদ্দিনের স্ত্রী মিরা বেগম, অপর বোন প্রথমডাংগা গ্রামের লালমিয়ার স্ত্রী মমতা বেগম (৩৫) ও নিকটাত্মীয় ধল্লাকান্দী গ্রামের মৃত ফয়েজ উদ্দিনের স্ত্রী রুপিয়া বেগমকে (৬০) আটক করে। পরে রাতে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

পীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ পালনে পল্লীবিদ্যুতের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে পুলিশের উপস্থিতি ঘটে। মিজান মাস্টার ও তার পরিবারের লোকজন হাইকোর্টের আদেশ বাধা দেয় এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়।

জেডআই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply