আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সেতুকে ঘিরে দুই প্রান্তের মানুষের দারুণ উচ্ছ্বাস। শুরু হয়েছে ক্ষণ গণনাও। নদীর দুই প্রান্তে সেতু শুধু সংযোগ ঘটালেও, কিছু কিছু সেতু উঠে এসেছে সেলুলয়েডেও। তেমনই সেতু নির্ভর দারুণ কিছু সিনেমা সম্পর্কে জেনে আসি চলুন।
পশ্চিম থাইল্যান্ডে অবস্থিত প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিখ্যাত কোয়াই নদী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যার ওপর যুদ্ধবন্দিদের অমানুষিক অত্যাচার করে জাপানিরা যুদ্ধের রসদ সরবরাহের জন্য বানিয়েছিল একটি সেতু। সেই সেতু তৈরির রোমাঞ্চকর কাহিনী নিয়ে কালজয়ী একটি উপন্যাস লিখেছিলেন পিয়েরে বুলে ‘দি ব্রিজ অন দি রিভার কাওয়াই’। আর তাকে চিত্ররূপ দিয়েছিলেন পরিচালক ডেভিড লিন। ১৯৫৭ সালে মুক্তির পর সারা দুনিয়ায় হইচই পড়ে যায় সিনেমাটি নিয়ে। আর অর্জনের ঝুলিতে যুক্ত হয় সাতটি অস্কার ও ২৭টি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মাননা।
২০১৫ সালের সাড়া জাগানো ঐতিহাসিক সিনেমা ‘ব্রিজ অফ স্পাইস’, যার সহ-প্রযোজক ছিলেন বিশ্বখ্যাত পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ। সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন টম হ্যাংকস। এ সিনেমায় মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর অ্যাজেন্ট তিনি। আর তার দায়িত্ব ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে সমঝোতা করে এক মার্কিন পাইলটকে ফিরিয়ে আনা। টান টান উত্তেজনার ব্রিজ অফ স্পাই বিশ্বজুড়ে ১৬৫ মিলিয়ন ডলার আয় করে, পাশাপাশি সে বছর অস্কারে ৬টি নমিনেশনও পায় সিনেমাটি।
‘দ্য ব্রিজেস অব ম্যাডিসন কাউন্টি’ সিনেমাটি ১৯৬৫ সালের পটভূমিতে ইতালির যুদ্ধের সময়কার এক কনে ফ্রান্সেসকা জনসন অর্থাৎ মেরিল স্ট্রিপকে নিয়ে। তার সঙ্গে দেখা হয় ফটোসাংবাদিক ইস্টউডের। যিনি ম্যাডিসন কাউন্টির ঐতিহাসিক সেতুর ছবি তুলতে এসেছেন। মাত্র চারদিনে তাদের মাঝে গড়ে ওঠে নিবিড় এক সম্পর্ক। সেই গল্প দর্শক-সমালোচকদের এতোটাই মন ছুঁয়ে যায় যে, মেরিল স্ট্রিপ এ সিনেমার জন্য বাগিয়ে নেন সেরা অভিনেত্রীর অস্কার।
দ্য লাভার্স অন দ্য ব্রিজ, ১৯৯১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ ফ্রেঞ্চ সিনেমার কাহিনী গড়ে উঠেছে গৃহহীন স্ট্রিট পারফর্মার অ্যালেক্স ও প্রায় অন্ধ চিত্রশিল্পী মিশেলকে নিয়ে। দুজনেই রাত হলে প্যারিসের সিন নদীর প্রাচীন সেতু পন্টন্যুফ-এ ঘুমান। সম্পূর্ণ অচেনা দুজন মানুষ পরিচয়ের পর নিজেদের একদম ভিন্নরূপে আবিষ্কার করে। কিন্তু কী হবে, যখন মিশেল তার দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি হারিয়ে ফেলবে? অ্যালেক্স কি তাকে ছেড়ে চলে যাবে? জানতে হলে দেখতে হবে দ্য লাভার্স অন দ্য ব্রিজ।
অপারেশন মার্কেট গার্ডেন, জার্মানদের ফ্রন্ট লাইন ভাঙার আশায় নেদারল্যান্ডসের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু কৌশলে দখল করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঐতিহাসিক এ ঘটনা নিয়ে নির্মিত সিনেমা ‘অ্যা ব্রিজ ঠু ফার’। ১৯৭৭ সালে চারটি বাফটা অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয় এ সিনেমা।
হলিউডে সেতু নিয়ে এত বিখ্যাত সিনেমা থাকলেও, এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে এবার বাংলাদেশেও বাংলার মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিয়ে নির্মিত হচ্ছে একটি সিনেমা। সেই সিনেমায় স্বপ্নের সেতু কতোটুকু উঠে আসবে তা জানা যাবে সময় হলেই। কিন্তু এরই মধ্যে বাংলাদেশের সামর্থ্য, সক্ষমতা আর গৌরবের চিহ্ন হয়ে পদ্মা সেতু স্থান করে নিয়েছে প্রতিটি বাংলাদেশির বুকে।
/এসএইচ
Leave a reply