ইউক্রেনে লক্ষ্যপূরণের দ্বারপ্রান্তে রাশিয়া

|

সেভেরোদোনেৎস্ক পতনের মধ্য দিয়ে ইউক্রেনে লক্ষ্যপূরণের দ্বারপ্রান্তে রাশিয়া। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পশ্চিমাদের হুমকি-ধামকি, ইউক্রেনের সর্বাত্মক প্রতিরোধ কোনো কিছুই ঠেকাতে পারছে না রুশ বাহিনীর অগ্রযাত্রা। একের পর এক শহর দখলে নিয়ে ন্যাটো জোটকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে মস্কো। দক্ষিণে ক্রাইমিয়া থেকে উত্তরে খারকিভ পর্যন্ত পূর্ব সীমার প্রায় পুরোটা এখন রুশদের নিয়ন্ত্রণে।

৫ম মাসে গড়িয়েছে রুশ ইউক্রেন যুদ্ধে। ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর প্রায় তিন মাসের মাথায় কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী মারিওপোল দখলে নিয়েছিল রুশ বাহিনী। ঠিক এক মাস যেতেই পূর্বাঞ্চলীয় সেভেরোদোনেৎস্কের নিয়ন্ত্রণও তাদের হাতে। অর্থাৎ গোটা লুহানস্ক এখন মস্কোর কব্জায়। এর মধ্য দিয়ে ক্রাইমিয়া থেকে দোনেৎস্ক পর্যন্ত স্থল করিডর তৈরির যে লক্ষ্য নিয়ে এগুচ্ছিলো মস্কো পৌঁছে গেছে তার খুব কাছাকাছি।

অবশ্য হার স্বীকারে রাজি নয় ইউক্রেন। সেভেরোদোনেৎস্ক থেকে সেনা সরিয়ে নেয়ার পদক্ষেপকে ব্যাখ্যা করছে কৌশলগত পরিবর্তন হিসেবে। ইউক্রেনের গোয়েন্দা প্রধান কাইরিলো বুদানোভ বলেন, আমরা কৌশলগত অবস্থান পরিবর্তন করছি। সেভেরোদোনেৎস্কের বদলে অন্যত্র সেনা সমাবেশ করছি। রাশিয়ার মোট সেনার তিন ভাগের দুই ভাগই এখানে অভিযানে পাঠিয়েছে। তাদের প্রতিহতে নতুন পরিকল্পনা আছে আমাদের।

তবে একমাস ধরে সেভেরোদোনেৎস্কে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে ক্লান্ত ইউক্রেনীয় সেনারা। তারা বলছে, সবচেয়ে প্রশিক্ষিত ব্রিগেড নিয়ে লড়াই শুরু করলেও হতাহতের শিকার বড় অংশ। একজন সেনাকে রয়টার্সের ক্যামেরবায় বলতে দেখা যায়, আমার ইউনিট শতভাগ পেশাজীবীদের নিয়ে তৈরি ছিল। তাদের ৮০ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে অথবা গুরুতর আহত। হতাহতদের দ্রুত সরিয়ে নিয়ে নতুন সেনা পাঠানো হয়। তাদের মূল প্রশিক্ষণ হয় সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রেই।

লুহানস্কে লক্ষ্য পূরণের পর এবার কি তবে দোনেৎস্ক হবে মূল টার্গেট? মস্কোর তরফ থেকে অবশ্য কোনো বিবৃতি আসেনি এখনও। শনিবার ইউক্রেনজুড়েই গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে সর্বাত্মক হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি বলছেন, শত্রুপক্ষ কেবল তাদের স্থাপনা ধ্বংস করছে না, জনগণের অনুভূতির ওপরও চাপ তৈরি করছে। আজও ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা যথেষ্ট নয়। আরও অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র দরকার বলেও জানাচ্ছেন তিনি।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী ৪ মাসের যুদ্ধে ইউক্রেনে বেসামরিক প্রাণহানি প্রায় ৪ হাজার ৭শ। কিয়েভ বলছে তাদের ১০ হাজার সেনার মৃত্যু হয়েছে। রাশিয়ারও ৪ হাজারের বেশি সেনা নিহতের কথা বলছে বিবিসি।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply