পুলিশি হেফাজতে এক নারীর মৃত্যুকে ঘিরে তোলপাড় চলছে ইরানে। বাধ্যতামূলক হিজাব আইনের আওতায় আটক মাহশা আমিনির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। তবে এ ঘটনাকে সন্দেহজনক বলে মনে করছে পরিবার ও মানবাধিকার কর্মীরা। শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মাহশার জানাজার পর বিক্ষোভে অংশ নেয় হাজারও মানুষ। পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। মাহসার মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি। খবর সিএনএন ও রয়টার্সের।
ওড়না দিয়ে পুরো মাথা না ঢাকার অপরাধে গত মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আটক করা হয়েছিল মাহসা আমিনিকে (২২)। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রকাশিত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, পুলিশের কার্যালয়ে অনেক নারীর সঙ্গে ছিলেন মাহসাও। পোশাক নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ শাখা মোরালিটি পুলিশের সাথে তার তর্কবিতর্কের দৃশ্যও দেখা যায়। এক পর্যায়ে মাহসা অসুস্থ হয়ে পড়ে যান মেঝেতে। আমিনিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ছবিও প্রকাশ করেছে পুলিশ। তবে থানায় পৌঁছানোর আগে কিংবা হাসপাতালে নেয়ার মাঝামাঝি সময়ে তার সঙ্গে কী ঘটেছিল, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মাহসার মৃত্যুর ঘটনার পর নিন্দার ঝড় ওঠে ইরানজুড়ে। পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে তার, ওঠে এমন অভিযোগ। মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে দাবি কোনো কোনো মানবাধিকার সংস্থার। শনিবার মাহসা আমিনির জানাজায় অংশ নেয় হাজারও মানুষ। দাফনের পর তেহরানে গভর্নরের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করে জনতা। তাদের ছত্রভঙ্গে টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ। প্রশাসনের দাবি, হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে মাহসা আমিনির। তবে পরিবারের দাবি, কখনোই হার্টের সমস্যা ছিল না তার।
ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ ভাহিদি বলেন, আঘাতের কোনো চিহ্ন শরীরে দেখা যায়নি। তারপরও ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করছি। তার মতো অনেককেই আটক করা হয়েছিল, যারা পুরো মাথা আবৃত করেনি। তার সম্ভবত আগে কোনো শারীরিক সমস্যা ছিল। পরবর্তীতে আরও বিস্তারিত বলা যাবে।
১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই ইরানে নারীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। আর এই আইন কঠোরভাবে মেনে চলতে বাধ্য করে মোরালিটি পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারপন্থী দলগুলো এই আইন পরিবর্তনের দাবি জানালেও কট্টরপন্থীদের আপত্তির কারণে তা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: হোস্টেলে মেয়েদের ব্যক্তিগত মুহূর্তের ভিডিও ইন্টারনেটে, চন্ডিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে তোলপাড়
/এম ই
Leave a reply