ব্যাংক ও খোলা বাজারে এখনও ডলারের দামে বেশ পার্থক্য

|

ডলারের বাজার এখনও স্বাভাবিক হয়নি। ব্যাংক আর খোলা বাজারে দামের পার্থক্য এখনও বেশ। বাজার স্বাভাবিক করতে রেমিটেন্স, রফতানি আয় ও আমদানি পর্যায়ে বেঁধে দেয়া হয় দাম। কিন্তু বাজারমুখী করার ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সংকটের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ দরকার। বড় লেনদেনের ক্ষেত্রে বাজার নির্ভর করা ঠিক হবে না।

আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের দাম এখন ১০৬ থেকে ১০৭ টাকা। তবে খোলা বাজারে ডলার কিনতে লাগছে ১১৩ থেকে ১১৪ টাকা। অভিযোগ, ব্যাংকগুলো পর্যাপ্ত ডলার দিচ্ছে না।

মুদ্রা বিনিময়ের এক ব্যবসায়ী বললেন, ব্যাংকে ডলারের রেট ১০৬ টাকা ২৫ পয়সা নির্ধারণ করে রাখছে। কিন্তু ডলার দিচ্ছে না। তাহলে এ রেটের অর্থ কী?

বোর্ডে লিখে রাখা হলেও সেই দামে লেনদেন করেন না কোনো মানি এক্সচেঞ্জ হাউস। মুদ্রা বিনিময়ের আরেক ব্যবসায়ী প্রশ্ন তোলেন, দাম নির্ধারণ করে দিলেও দেড় টাকা লাভে কী ডলার বিক্রি করা যায়?

সব তফসিলি ব্যাংকে ডলারের বিনিময় মূল্য হবে অভিন্ন। গেল সপ্তাহে ব্যাংক নির্বাহীদের শীর্ষ সংগঠন এবিবি ও ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার এসোসিয়েশনের বৈঠকে নেয়া হয় এমন সিদ্ধান্ত। প্রবাসী আয়, রফতানি আয় ও আমদানি পর্যায়ে ডলার মূল্য নির্ধারণ করে দেয় দুই পক্ষ। এই সিদ্ধান্ত কতটা টেকসই?

বিআইবিএম এর সাবেক মহাপরিচালক তৌফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ডলারের সংকট চলছে। কিন্তু অনেক ব্যাংক খুব বেশি লাভ করছে। ডেটা কখনো বলে না, রেট এত বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু রেট বাড়ছে কেন, নিশ্চয় নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

রফতানিকারক ও খোলা বাজারে ডলারের দামের ব্যবধান বাড়ছে। কমিয়ে আনতে দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্যোগ দরকার।
অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, অসামঞ্জস্যতা হচ্ছে, একজন রফতানিকারককে দেব ১০০ বা ৯৯ টাকা, আর মানি একচেঞ্জারকে দেব ১০৮ বা ১০৯ টাকা। সেটা কেন? বর্তমানে যেটা হচ্ছে, সেটা একধরনের ব্ল্যাকমেলিং।

ডলার বাজারের অব্যবস্থাপনায় বেরিয়ে গেছে বড় অঙ্কের অর্থ। বলা হচ্ছে ডলার বেচাকেনা পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করা ঠিক নয়। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি।

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, দুই মাসে আড়াই বিলিয়ন লস করে ফেলছি। এটা ডলারকে ডিফেন্ড করা। আমি তা বলছি না। আমি ডলারের রেটকে স্মুথ করতে বলছি। ডলার যেদিকে যাবে বা যাক, সেটিকে বাধা দেয়া যাবে না।

বৈশ্বিক নানান সংকটে অস্থিতিশীল ডলারের বাজার কবে স্বাভাবিক হবে তা কেউ জানে না। তবে স্থিতিশীল করার ক্ষেত্রে সতর্ক অবস্থানে সরকার।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply