তাহেরের ঘাতকদের মৃত্যুদণ্ড দেখার অপেক্ষায় একটি বাড়ি

|

অধ্যাপক তাহেরের হত্যাকারীদের ফাঁসি দেখার জন্য দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে যেনো অপেক্ষা করছে বাড়িটি।

রাজশাহী ব্যুরো:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাহেরের হত্যাকারীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর দেখার জন্য দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে যেনো অপেক্ষা করছে একটি বাড়ি। এই দীর্ঘ সময়ে যে বাড়িতে আলো জ্বলেনি একটি রাতের জন্যও। যেখানে ঘরে ঘরে এখনও রয়ে গেছে ড. তাহেরের ব্যবহার্য জিনিসপত্র। তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালে পুলিশ তালাবদ্ধ করে রাখায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও নতুন করে আর কাউকে বরাদ্দ দেয়নি সেই বাড়ি।

জঙ্গল আর লতাগুল্মে জড়িয়ে যাওয়া এই বাড়িতেই ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি খুন হন ড. তাহের। পেছনের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় তার মরদেহ। তদন্ত আর বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালে পুলিশ তালাবদ্ধ করে রাখে দোতলা বাড়িটি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নতুন কাউকে বরাদ্দ দিতে না পারায় পশ্চিমপাড়ার ২৩ নম্বর এই বাড়িটিকে এখন সবাই চেনে নিঃসঙ্গ বাড়ি হিসেবে। এমনকি আশেপাশের অধিবাসীদের এখনও তাড়া করে ফেরে অজানা আশঙ্কা।

বাড়ির ভেতরে এখনও রয়ে গেছে ড. তাহেরের ব্যবহার্য সব জিনিসপত্র। দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত থাকায় বাড়িতে ঢোকার দরজার মুখে বাসা গড়েছে উইপোকা। সংস্কারের অভাবে যখন দুঃসহ স্মৃতিময় বাড়িটি ধুঁকছে, তখন অন্যদিকে চলছে ভিন্ন এক প্রস্তুতি। রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির মঞ্চ পরিস্কার করে রং করা হয়েছে নতুন করে। কনডেম সেলে থাকা খুনি মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের ফাঁসি যেকোনো সময় একসঙ্গে কার্যকর করা হবে। এরই মধ্যে ফাঁসির পর কবর খোঁড়ার প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছেন দুই আসামির পরিবার।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, আইনি লড়াইয়ে দীর্ঘ সময় লাগলেও শেষ পর্যন্ত ক্যাম্পাসের ইতিহাসে অন্যতম নৃশংস এই খুনিদের মৃত্যুদণ্ড ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ফাঁসি কার্যকর হবার পর আইনগতভাবে অনুমোদন পেলেই ড. তাহেরের স্মৃতি বিজড়িত এই পশ্চিমপাড়ার ২৩ নম্বর বাড়িটি সংস্কার করা হবে বলে তারা জানিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার ম্যানহোল থেকে উদ্ধার হয় নৃশংসভাবে হত্যার শিকার অধ্যাপক ড. তাহেরের মরদেহ। এর দুই দিন পর ওই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

/এএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply