কী আছে খোকনের ভাগ্যে?

|

সাইফুদ্দিন রবিন

সুপ্রিম কোর্ট বারে দায়িত্বগ্রহণ নিয়ে নাটকীয়তা থামছেই না। এবার সভাপতি পদে দায়িত্ব নেয়া বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। শনিবার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ফোরামের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ফোরামের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের অভিযোগ আনা হয় খোকনের বিরুদ্ধে।

প্রাথমিকভাবে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সংগঠন থেকে খোকনকে বহিষ্কারের বিষয়টি আলোচনা হয়। দলীয়ভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্তও নেয়া হয়।

নেতৃবৃন্দের মতে, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২০২৫ মেয়াদের নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নীল প্যানেল থেকে নির্বাচন করেছিলেন মাহবুব উদ্দিন খোকন। তাই সভাপতির দায়িত্বগ্রহণে বিরত থাকতে ফোরামের নির্দেশনা অমান্য করে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তোলা হয় বারের নির্বাচিত এই সভাপতির বিরুদ্ধে।

এবারের নির্বাচনও ছিল গেলোবারের মতো আলোচিত-সমালোচিত। ফলাফল ঘোষণা ঘিরে মারামারি থেকে শুরু করে কারচুপির অভিযোগ ছিল এ নির্বাচনেও। মারামারির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী জাতীয়তাবাদী ফোরামের রুহুল কুদ্দুস কাজলকে কারাগারেও যেতে হয়েছিল।

বিতর্কের মধ্যেই ঘোষিত ফলাফলে মাহবুব উদ্দিন খোকন সভাপতি এবং সদস্যপদে ৩ জন নির্বাচিত হয় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্যানেল থেকে। শুরু থেকেই ফোরাম, নির্বাচনের সমালোচনা করে আসছিল। ফলাফল বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবিও জানিয়েছে তারা। এমনকি সভাপতি নির্বাচিত হয়ে মাহবুব উদ্দিন খোকনও পুনরায় নির্বাচন দাবি করেছিলেন।

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফোরাম নেতৃবৃন্দকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই নির্বাচন ঘিরে নানা অভিযোগও করেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। গত ২৭ মার্চ ফোরাম সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী ও মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল দায়িত্বগ্রহণ থেকে বিরত থাকার চিঠি দেয় ব্যারিস্টার খোকনসহ ৪ জনকে। কিন্তু বৃহষ্পতিবার বারের সদস্য পদে বিজয়ী বাকি ৩ আইনজীবী দায়িত্বগ্রহণ না করলেও খোকন সভাপতির দায়িত্ব নেয়।

এরপরই জরুরি বৈঠক করে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সংগঠনটি। পেশাজীবী হিসেবে নিজেদের বিএনপির সহযোগী সংগঠন উল্লেখ করে ফোরামের নেতৃবৃন্দ যমুনা নিউজকে জানান, ব্যারিস্টার খোকনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। হওয়া মাত্রই গণমাধ্যমকে তা জানানো হবে। জানা গেছে, এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে। আইনজীবী নেতাদের সিদ্ধান্ত মেনে ফোরাম থেকে বহিষ্কার করা হলে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের মূল দলে থাকা যুগ্ম মহাসচিব পদও কি ঝুঁকির মুখে পড়বে? এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে আপাতত কিছুটা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

লেখক: বিশেষ প্রতিনিধি, যমুনা টেলিভিশন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply