নরসিংদীর গৃহবধূ কুয়াকাটায় হত্যা, ২ বছর পর রহস্য উদঘাটন

|

নিহত মার্জিয়া কান্তা (ডানে)

নরসিংদী প্রতিনিধি:

নরসিংদীতে মার্জিয়া কান্তা (২৫) নামে এক গৃহবধূকে স্বামী কর্তৃক হত্যা করে লাশ গুম করার দুই বছর পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ও কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেলের দুই মালিকসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যার পর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ফেলে দেয়ার লাশ উদ্ধার করতে না পারলেও উদ্ধার হয়েছে নিহতের ব্যবহৃত লাগেজ, কাপড়, জুতাসহ অন্যান্য আলামত।

মার্জিয়া কান্তা নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার বীরভাগবেড় গ্রামের সোহরাব হোসেন রতনের মেয়ে। সে সাভারের আশুলিয়ায় কান্তা বিউটিপার্লার নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, নিহতের স্বামী কুড়িগ্রামের রৌমারি এলাকার শহিদুল ইসলাম সাগর (৩৭), সাগরের সহযোগী রৌমারি থানার রতনপুরের শাহিনুর ইসলামের ছেলে মো. মামুন মিয়া (২৬), পটুয়াখালীর কুয়াকাটার হোটেল আল মদিনার মালিক মো. দেলোয়ার হোসেন (৪৪), তার ভাই আনোয়ার হোসেন (৩৭) এবং হোটেল ম্যানেজার আমির হোসেন (৩৮)।

শনিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, পরিচয়ের সূত্র ধরে পার্লার ব্যবসায়ী মার্জিয়া কান্তার সাথে বিয়ে হয় কুড়িগ্রামের শহিদুল ইসলাম সাগরের। বিয়ের পর সাগরের আরও একাধিক স্ত্রী রয়েছে জানতে পারে কান্তা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়।

২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে গৃহবধূ মার্জিয়াকে নিয়ে ভারত ভ্রমণের উদ্দেশ্যে নরসিংদীর বেলাবো থেকে আশুলিয়ার বাসায় যায় স্বামী সাগর। সেখান থেকে প্রস্তুতি নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে তারা শরিয়তপুর যায়।

সেখানে সহযোগী মামুনকে নিয়ে নদী ভাঙ্গন দেখানোর কথা বলে হত্যা পরিকল্পনায় ব্যর্থ হয়। পরে শরীয়তপুর থেকে কান্তাকে নিয়ে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত দেখানোর জন্য সেখানকার আল মদিনা নামের একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন তারা। ওই হোটেল কক্ষেই স্বামী ও তার সহযোগী মামুন গৃহবধূ মার্জিয়াকে গলাটিপে হত্যা করে খাটের তলায় লাশ লুকিয়ে রেখে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে হোটেল কক্ষ থেকে লাশ সন্ধান করতে না পারলেও অজ্ঞাত ব্যক্তিদের লাগেজ, কাপড়, একটি চাপাতিসহ কিছু আলামত উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ।

কান্তা নিখোঁজের ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তার স্বামী ও সহযোগীকে গ্রেফতার ও তদন্তে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর এ হত্যার তথ্য।

গ্রেফতারকৃত আসামিরা জানায় হত্যা করে লাশ গুম করে পলাতক থাকে তারা। পরে হোটেলে দূর্গন্ধ পেয়ে পুলিশি হয়রানি এড়াতে হোটেল কর্তৃপক্ষ সেখান থেকে লাশটি কুয়াকাটা সমুদ্রে ফেলে দেয়। পুলিশ আলামত উদ্ধার করলেও লাশ উদ্ধার করতে পারেনি।

নরসিংদী পুলিশ সুপার (পিবিআই) মো. এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply