অল্প বয়সের বিয়েই কি কেড়ে নিল কিশোরীর জীবন?

|


টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ

টাঙ্গাইলের বাসাইলে বিয়ের ৩৪ দিন পর নুরনাহার (১৪) নামের এক কিশোরী গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। ডাক্তার বলছেন, বিয়ের পর শারীরিক সম্পর্কের ফলে মেয়েটির গোপনাঙ্গে রক্তক্ষরণ শুরু হয়; মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোববার তার মৃত্যু হয়। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কলিয়া বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী নুরনাহার। পড়ালেখায় ছিল মেধাবী। পরিবার অসচ্ছল হওয়ায় মেয়েটি তার নানার বাড়ি উপজেলার কলিয়া গ্রামে থাকত। সম্প্রতি উপজেলার ফুলকি পশ্চিমপাড়া গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে ৩৪ বছর বয়সী সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাস ফেরত রাজির খানের সঙ্গে বিয়ে হয় মেয়েটির। তবে মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় তাদের বিয়ের রেজিস্ট্রি হয়নি।

বিয়ের পর থেকেই তার গোপনাঙ্গে রক্তক্ষরণ শুরু হয়।  একপর্যায়ে নুরনাহারের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা করান। কিন্তু পরিস্থিতির কোন উন্নতি না হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার তাকে টাঙ্গাইলের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। 

পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার ভোরে তার মৃত্যু হয়। ওই দিন ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ নানার বাড়ির স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। 

এ ব্যাপারে নুরনাহারের নানা লাল খান বলেন, মেয়েটির বিয়ের রাত থেকেই রক্তক্ষরণ হচ্ছে বলে জানিয়েছিল। এজন্য নুরনাহারের শাশুড়ি তাকে গ্রাম্য কবিরাজের কাছ থেকে ওষুধ খাওয়াচ্ছিল। পরে রক্তক্ষরণ বেশি হলে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় তার নানা লাল খান নুরনাহারের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।  

এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফিরোজুর রহমান বলেন, নারীর প্রথম যৌনমিলনে ভয় ও আতঙ্ক কাজ করে। অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে হলে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এজন্য দ্রুত গাইনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত।

এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল মতিন বলেন, পুলিশ অভিযোগটি তদন্ত করছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply