বেঁচে গেল জার্মানি, হার না মানা হাঙ্গেরির বিদায়

|

“বেঁচে গেল জার্মানি, হার না মানা হাঙ্গেরির বিদায়”

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা নাকি পরের আসরের প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেয়, এই নিয়ম মেনে ২০১৮ সালে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল জার্মানি। কিন্তু ইউরোর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন তারা না হলেও গ্রুপ অব ডেথের শেষ ম্যাচের শেষ দশ মিনিট আগেও গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়ার খুব কাছেই চলে গিয়েছিল জোয়াকিম লো’র জার্মানি। অবশেষে মৃত্যুকূপে পতন ঘটেনি তাদের। আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় গ্রুপ এফ এর শেষ ম্যাচে হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে ২-২ গোলে ড্র করে তৃতীয় দল হিসেবে রাউন্ড অব সিক্সটিন নিশ্চিত করেছে তারা।

আর চোখের জলে বিদায় নিয়েছে গ্রুপ অব ডেথকে সত্যিকারের মৃত্যুকূপ বানানো হাঙ্গেরি, যারা ফ্রান্সকে রুখে দিয়ে জার্মানির সাথে ম্যাচেও পিছিয়ে ছিল না কখনোই।

ড্র করলে জার্মানি চলে যেতে পারবে দ্বিতীয় রাউন্ডে। আর ফ্রান্সকে গত ম্যাচেই একরাশ বিস্ময় উপহার দেয়া হাঙ্গেরির জন্য দরকার ছিল জয়। এমন দুরূহ সমীকরণকেও অনেকটাই সম্ভব বানিয়ে ফেলেছিল পুসকাস ককসিসদের উত্তরসূরিরা।

১১ মিনিটেই হামেলস, নয়্যারদের প্রাচীর ভেঙে দেয় হাঙ্গেরি। রোল্যান্ড সালাইয়ের দুর্দান্ত ক্রসে উড়ন্ত হেডে ম্যানুয়েল নয়্যারকে পরাস্ত করেন হাঙ্গেরিয়ান নাম্বার নাইন অ্যাডাম জালাই।

পুরো প্রথমার্ধই কাটে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে। হাঙ্গেরির দাপটই ছিল বেশি। তাদের উজ্জীবিত ফুটবলের সামনে মাঝমাঠে দখল হারিয়ে ফেলছিল ক্রুজ, গুন্ডোগান, কিমিখ সমৃদ্ধ মিডফিল্ড। পরীক্ষা দিতে হয়েছে রুডিগার, হামেলসকে। ব্যস্ত ছিলেন নয়্যারও।

সার্জ নাব্রির নিষ্প্রভ থাকার ম্যাচে জার্মানি ম্যাচে ফেরে কিছুটা ভাগ্য আর কিছুটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের নায়ক কাই হ্যাভার্টজের হাত ধরে। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে হাঙ্গেরির গোলরক্ষক পিটার গুলাস্কি বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে হেডে গোল করে মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনাকে জাগিয়ে তোলেন হ্যাভার্টজ। গোল করার পরপরই ডিফেন্সিভ কৌশলের অংশ হিসেবে হ্যাভার্টজকে তুলে নেন কোচ জোয়াকিম লো। কিন্তু তিনি বোধহয় জানতেন না, এই ম্যাচটা হারিয়ে দিতে যাচ্ছে কোনো রোলার কোস্টার রাইডকেও!

জার্মানি সমতায় ফেরে ৬৬ মিনিটে। হ্যাভার্টজ বেঞ্চে চলে যান ৬৭ মিনিটে। আর হাঙ্গেরি আবার গোল করে বসে ৬৮ মিনিটে!

জার্মান সমর্থকদের উল্লাস শেষও হয়নি। আগুয়ান নয়্যারকে হেডে পরাস্ত করে গ্রুপ অব ডেথকে সত্যিকারের নাট্যমঞ্চ বানিয়ে দেন হাঙ্গেরিয়ান লেফট উইঙ্গার আন্দ্রাস শ্যাফার। জার্মানির উপর জেঁকে বসেছে তখন বিদায় হবার পুরনো ভয়।

কিন্তু সেই ভয়ও বেশি সময় থাকার সুযোগ পেল না এমন অনিশ্চয়তার রাতে। ৮৪ মিনিটে লিওন গোরেস্কার তীব্র গতির শট পিটার গুলাস্কি প্রাণপণে আটকাতে চাইলেও বল তার পায়ে লেগে চলে যায় জার্মান লক্ষ্যে। বদলি হিসেবে নেমে এই গোলের কারিগর বায়ার্ন মিউনিখের জামাল মুসায়লা খেলেছেন দুর্দান্ত।

ম্যাচের ৮৬ মিনিটে হাঙ্গেরিকে পেনাল্টি দেয়ার খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন জোশুয়া কিমিখ। কিন্তু এমন ম্যাচে ভাগ্যও নাকি বড় দলগুলোর কাছেই ধরা দেয়। তাই সাহস ও সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দেয়া হাঙ্গেরির স্বপ্নকেই ডুবে যেতে হয় ইউরো ২০২০ এর মৃত্যুকূপের অতলে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply