মাকে বাঁচাতে গিয়ে খুন হলো ছেলে

|

প্রতিবেশির আক্রমণ থেকে মা কে রক্ষা করতে গিয়ে খুন হলো প্রতিবন্ধী ছেলে।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রাম সদরের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নে মাকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রতিবেশীর লাঠির আঘাতে প্রাণ গেল জাহিদ হাসান (১৮) নামে এক কিশোরের।

পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিবেশী কাশেম (৩০) গাছের ডাল দিয়ে ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ছলিমা খাতুন (৪৮) কে রাস্তায় ফেলে পেটানোর সময় ছলিমার ছেলে জাহিদ মাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তাকেও বেধড়ক মারপিট করা হয়। এসময় তার রক্তনালীর টিউমারে আঘাত লাগে। পরে আহত মা ও ছেলেকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাহিদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এ ঘটনায় ঘাতক কাশেমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কাচিচর এলাকার ৭,৮ ও ৯নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর ছলিমা বেগমের কাছে বুধবার সকালে এক মা ও তার মেয়ে ত্রাণের জন্য আসে। এ সময় বাড়ী সংলগ্ন রাস্তায় কাউন্সিলরের সাথে ত্রাণের তালিকা নিয়ে ওই দুই মহিলার বাক-বিতন্ডা হয়। এই রাস্তা নিয়ে ছলিমার সাথে প্রতিবেশী কাশেমের সাথে দ্বন্দ্ব্য ছিল। চিৎকার শুনে কাশেম মনে করেছিল তাদেরকে উদ্দেশ্য করে কাউন্সিলর ছলিমা চিৎকার করছে।

এটা ভেবেই বাড়ী থেকে বের হয়ে কাশেম একটি ইউক্যালিপ্টাস গাছের ডাল ভেঙে ছলিমাকে পেটাতে থাকে। এসময় ছলিমা মাটিতে পড়ে গেলে তার প্রতিবন্ধী ছেলে জাহিদ মাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসলে তাকেও বেদম মারপিট করা হয়। এ সময় জাহিদ হাসানের মাথায় ও চোখের উপর বেড়ে ওঠা টিউমারে আঘাত লাগলে তা ফেঁটে যায়।

পরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মা ও ছেলেকে উদ্ধার করে প্রতিবেশীরা তাদেরকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাহিদ মারা যায়।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পুলক কুমার সরকার জানান, ছেলেটি বিরল হেমাংজিওমা রোগে ভুগছিল। এটা রক্ত নালীর টিউমার। টিউমারে আঘাত লাগায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মো. শাহরিয়ার জানান,
হত্যার অভিযোগ পাওয়ার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) উৎপল কুমার রায়ের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে আসামী কাশেমকে ওই এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply