টাকা না দিলে ক্রসফায়ারের হুমকি! জেল সুপার-ওসিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

|

জামিনপ্রাপ্ত আসামিকে আটকে রেখে মামলা দেয়ার অভিযোগ জেল সুপার-ওসিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক আসামি জামিন পাওয়ার পর আবার তাকে কারাগারের ভেতর থেকেই গ্রেফতার করে মামলায় জড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্বজনদের অভিযোগ, ভুক্তভোগী হাফিজকে ছাড়তে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে পুলিশ, টাকা না দিলে তাকে ক্রসফায়ারে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।

সোমবার (১৯ জুলাই) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সদর) আয়েশা বেগমের আদালতে ভুক্তভোগীর মা রেজিয়া বেগম বাদী হয়ে এই মামলা করেন। এজাহারে আসামি করা হয়েছে জেলা কারাগারের সুপার ইকবাল হোসেন, জেলার দিদারুল আলম, ডেপুটি জেলার রেজাউল করিম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম, পরিদর্শক (অপারেসন্স) সোহরাব আল হোসাইন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাবুল ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুজন কুমার চক্রবর্তীকে।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৪ জুন রেজিয়া বেগমের ছেলে হাফিজ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশ। পরে ১৫ জুলাই সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে জামিনের ছাড়পত্র দেন। কিন্তু ওইদিন রাত পর্যন্ত কারাগারের ফটকে রেজিয়া বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা অপেক্ষা করলেও সেদিন তিনি বের হননি। পরদিন সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেসন্স) সোহরাব আল হোসাইন, এসআই বাবুল ও এসআই সুজন কুমার চক্রবর্তী কারাগারে গিয়ে জেল সুপার ইকবাল হোসেন, জেলার দিদারুল আলম, ডেপুটি জেলার রেজাউল করিমের সঙ্গে যোগসাজশে একটি লাল গাড়ি দিয়ে হাফিজ ভূঁইয়াকে উঠিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় নিয়ে যান। সেখানে তাকে দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখা হয়। পরে রেজিয়া বেগম ও তার মেয়ের জামাতা মন মিয়া সদর মডেল থানায় গেলে সেখানকার পরিদর্শক (অপারেসন্স) সোহরাব আল হোসাইন হাফিজকে ছাড়তে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন, নাহয় তাকে ক্রসফায়ারে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।

এজাহারে উল্লেখ করে হয়েছে, হুমকির পরে পরিদর্শককে (অপারেসন্স) বাধ্য হয়ে তারা পাঁচ হাজার টাকা দিলে রাতের ভেতরে হাফিজকে ছেড়ে দেবেন বলে জানান। কিন্তু টাকা নেয়ার পরও সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেসন্স), এসআই বাবুল ও এসআই সুজন কুমার চক্রবর্তী জানান, দাবি করা টাকা না দিলে হাফিজকে ডাকাতির মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়া হবে। অবশেষে টাকা না পেয়ে একমাস আগের এক মামলায় অজ্ঞাত আসামির স্থলে হাফিজকে আসামি করে আদালতে নেয়া হয়।

এজাহারে গত ১৬ জুলাই দুপুর ১২টা থেকে ১৭ জুলাই জেলা কারাগার ও সদর মডেল থানার সিসিটিভি ফুটেজ আদালতের মাধ্যমে সংগ্রহের অনুরোধ করা হয়। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী নিজাম উদ্দিন খান বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন। এ বিষয়ে পরবর্তী কর্মদিবসে আদেশ দেয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেসন্স) সোহরাব আল হোসাইন বলেন, মামলার বিষয়টি আমি অবগত নই। তাই কিছু বলতে পারছি না।

জেলা কারাগারের সুপার ইকবাল হোসেন বলেন, কারাগারে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রতিনিয়ত পুলিশ আসে। গ্রেফতারের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে কারাগারের সীমানা প্রাচীরের ভেতর থেকে কোনো আসামিকে গ্রেফতারের নিয়ম নেই। এসময় হাফিজকে আসামি করা হয়েছে শুনে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply