দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক মন্দার মুখে পড়তে যাচ্ছে বিশ্ব, জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

|

দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক মন্দার মুখে পড়তে যাচ্ছে বিশ্ব। এমন সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতিসংঘ। উন্নত দেশগুলোর মুদ্রা ও রাজস্বনীতির প্রভাবে ঝুঁকিতে পড়ছে উন্নয়নশীল অর্থনীতি। এর ফলে ২০০৮ সালের চেয়েও বড় অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়তে পারে বিশ্ব। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা, আঙ্কটাডের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ ভয়াবহ তথ্য। বলা হয়, পশ্চিমা নীতির কারণে ঋণের বোঝা বাড়ার ঝুঁকিতে অন্তত ৪৬ দেশ।

জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা, আঙ্কটাডের সম্মেলনে ২০২২ ও ২০২৩ সালের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস তুলে ধরা হয়। বিশ্ব এক ভয়াবহ আর্থিক মন্দার কিনারায় রয়েছে এমন সতর্কবার্তা উঠে এসেছে আঙ্কটাডের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিবেদনে। জাতিসংঘের সতর্কতা, চলতি বছরের ২.৫ শতাংশ থেকে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার কমে ২.২ শতাংশে দাঁড়াবে ২০২৩ সালে।

প্রতিবেদনটি বলছে, করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ গত তিন বছরে একের পর এক বড় আঘাত এসেছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। যা চলছে এখনও। এ পরিস্থিতিতে উন্নত দেশগুলোর মুদ্রানীতি, বিপদে ফেলছে বাকি বিশ্বকে। এক দশকের মধ্যে সুদের সর্বনিম্ন হার, মূল্যস্ফীতি ঠেকানোর ব্যর্থতায় বিপর্যয়ের পথে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতি।

আইএমএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিনা জর্জিয়েভা বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি এখন প্রবল ঢেউয়ের বুকে থাকা তরীর মতো দুলছে। সেটিকে তীরে ভেড়াতে সম্মিলিত চেষ্টা করতে হবে। গত তিন বছরে একটার পর একটা আঘাত এসেছে অর্থনীতিতে। যার প্রভাবে বিশ্বজুড়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হয়েছে, বিশেষ করে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের। জীবনযাত্রার ব্যয়ও বাড়িয়ে দিয়েছে এই আঘাত। ভূরাজনৈতিক সংকটের কারণে এগুলো মোকাবেলা কঠিন হয়ে পড়েছে।

প্রতিবেদন বলছে, ডলারের বিপরীতে মুদ্রার মান কমেছে ৯০টি উন্নয়নশীল দেশে। এদের মধ্যে ১০ শতাংশের বেশি দরপতন হয়েছে অন্তত ৩০টি দেশে। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে আশঙ্কাজনক হারে। যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রানীতির কারণে ঋণের বোঝা বাড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে অন্তত ৪৬টি দেশ।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষক জন গং বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো তাদের নিজ দেশের কাছে জবাবদিহি করলেও আঙ্কটাডের সতর্কবার্তায় কান দেবে না। উদীয়মান অর্থনীতির ঝুঁকি তারা বিবেচনায় নিচ্ছে না। তাই স্বনির্ভর হওয়ার ওপর প্রাধান্য দেয়া উচিত সব দেশেরই। ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া উচিত।

২০২৬ সালের মধ্যে বৈশ্বিক অর্থনীতি সংকুচিত হতে পারে ৪ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত। বিশ্লেষকরা বলছেন, আপাতত টিকে গেলেও দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব পড়বে ইউরোপ, চীন এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতেও।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply