দশমবারের মতো আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা

|

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

দশমবারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন শেখ হাসিনা। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে চলমান আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন এই রাজনৈতিক দলটির সভাপতি নির্বাচিত হলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটার দিকে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সম্মেলনের এই দ্বিতীয় অধিবেশন উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে, তিনি সকাল সাড়ে ১০টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সেই অধিবেশনটি শেষ হয় দুপুর একটার দিকে।

বাবা-মা, ভাই, স্বজন-সব হারিয়েছেন, বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে গেছেন ঘাতকের বুলেট থেকে। বিদেশে থাকা অবস্থায়ই হাল ধরেছেন দলের। দেশে ফিরে রাত-দিন চষে বেড়িয়েছেন দলকে সংগঠিত করতে। দিনে দিনে একজন পরিণত রাজনীতিক হয়ে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। দেশের সব সংকট সমাধানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। প্রাণনাশের চেষ্টা হয়েছে অন্তত বিশবার। তবুও দমে যাননি বঙ্গবন্ধু কন্যা। দক্ষতা, উৎকর্ষতায় নিজেকে ছাড়িয়ে গেছেন অনেক আগে। প্রশংসিত হয়েছেন বিশ্ব দরবারে। ১৯৮১ সাল থেকে ২০২২, টানা দশমবারের মতো আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

খুব মর্মান্তিক এক পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরতে হয়েছিল বঙ্গবন্ধু কন্যাকে। বাতাসে তখনও বারুদের গন্ধ; রক্তের দাগ মোছেনি। ৭৫’র ১৫ আগস্ট নারকীয় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের সদস্যরা। দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু, দেশে ফেরার পথ রুদ্ধ করার অপচেষ্টাকে প্রতিহত করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাবা-মাসহ স্বজন হারানো শোক বুকে নিয়ে প্রিয় জন্মভূমিতে ফেরেন শেখ হাসিনা। তার মাস দু’য়েক আগে বিদেশে থাকা অবস্থায়ই শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করে আওয়ামী লীগ।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুরু হয় শেখ হাসিনার নতুন পথচলা। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন- রাতদিন এক করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের বিপদসংকুল পথে যাত্রা শুরু হয় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার। দলকে সংগঠিত করলেন, সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে। প্রায় ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে আসে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা।

গেলো ৪১ বছরে আন্দোলন, সংগ্রাম, বন্ধুর পথ মাড়িয়ে বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসেন অধিষ্ঠিত শেখ হাসিনা। এ যাত্রায় ২১ আগস্টের মতো বর্বর হামলাসহ অন্তত বিশবার তাকে হত্যাচেষ্টা হয়েছে। কিন্তু কখনোই বিচ্যুত হননি নিজের লক্ষ্য থেকে।

উন্নয়ন, অগ্রযাত্রার রোল মডেল এখন বাংলাদেশ। মধ্যম আয়ের দেশে থেকে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশের পথে বাংলাদেশ। যার রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেগা ষ্ট্রাকচারের সঙ্গে সমানতালে চলছে তৃণমূলের উন্নয়ন। স্বপ্নের পদ্মাসেতু এখন বাস্তব। উদ্বোধনের অপেক্ষায় মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের মতো মেগা প্রকল্প।

সংকট, দুর্যোগ শক্তহাতে সামলেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। রোহিঙ্গা সংকট থেকে করোনা মহামারি, সবক্ষেত্রে সামনে থেকে মোকাবেলা করেছেন শেখ হাসিনা। বিশ্ব দরবারে হয়েছেন নন্দিত। এমন ঈর্ষণীয় সফলতায় অন্তত অর্ধশতাধিক পুরস্কার, পদকে ভূষিত হয়েছেন তিনি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠান থেকে।

দল থেকে দেশ, সবক্ষেত্রেই সফল জাতির জনকের উত্তরসূরী। আর তাই, দলের সভাপতি হিসেবে তার বিকল্প ভাবেন না কেউই। ২২-তম কাউন্সিলে দশমবারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে নতুন উদ্যমে দেশের কল্যাণে ভূমিকা রাখবে আওয়ামী লীগ এমন প্রত্যাশাই করছেন দলটির সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীরা।

আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে হ্যাটট্রিক করলেন ওবায়দুল কাদের

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply