ধ্বংসস্তূপে ভাইকে আগলে রাখেন ৭ বছর বয়সী বোন; জিনান ও আব্দোর চিকিৎসা চলছে

|

ছবি: সংগৃহীত

ভূমিকম্পে আরও সব ঘরের মতো ভেঙে পড়ে তাদের বাড়িটিও। মাথার ওপর নেমে আসে ছাদ। দু’দিন পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপের মাঝেই চাপা পড়েছিল তারা। সে সময়টায় পরম মমতায় ছোট ভাইকে আগলে রাখে ৭ বছর বয়সী জিনান। উদ্ধারকারীদের ক্যামেরায় ধারণ করা হয় চরম দুর্যোগের মুহূর্তে অবুঝ দুই ভাইবোনের মমতার দৃশ্য। প্রলয়ঙ্কারী ভূমিকম্পের দু’দিন পর সিরিয়ায় উদ্ধার হওয়া দুই শিশু জিনান ও আব্দো এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শঙ্কা কেটে গেলেও দেহের বেশ কয়েকটি হাড় ভেঙেছে তাদের। এপি’র খবর।

নিরাপদেই আছে দুই ভাইবোন। ছবি: সংগৃহীত

ইদলিবের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এখন জিনান ও আব্দো। চিকিৎসকরা বলছেন, পা ভাঙাসহ কিছু আঘাত রয়েছে দুই ভাই বোনের শরীরে। তবে জটিল কোনো শারীরিক সমস্যা নেই। আরও কিছুদিন চলবে চিকিৎসা। হাসান জোলাক নামের এক চিকিৎসক বলেন, পা ভেঙেছে। সাথে, আরও কয়েকটি অঙ্গে আঘাত পেয়েছে। অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ তারা ভালো আছে।

ধ্বংসস্তূপের মাঝে যেন হুট করেই বড় হয়ে গেলো ৭ বছর বয়সী জিনান! এক হাত দিয়ে ছোট ভাইয়ের মাথা আগলে রাখে সে ১৭ ঘণ্টা। একজন উদ্ধারকর্মীর উদ্দেশে জিনান বলে, আমাদের এখান থেকে বের করুন। আপনি যা বলবেন আমি তা-ই করবো। আপনার চাকর হয়ে থাকবো আমি।

এই ঘটনা মন ছুঁয়ে গেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোম আধানোম গেব্রেয়াসুসের। তিনি টুইট করে লিখেছেন, এই সাহসী মেয়ের জন্য অন্তহীন প্রশংসা।

জাতিসংঘের কর্মকর্তা মোহামাদ সাফা এই দুই ভাইবোনের ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়ে ১৭ ঘণ্টা নিজের ছোট ভাইয়ের মাথা আগলে রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে এই ৭ বছর বয়সী মেয়ে। কিন্তু তাদের কথা কেউ শেয়ার করছে না। মেয়েটা যদি মারা যেতো তবে সবাই তাদের ছবি ছড়িয়ে দিতো। ইতিবাচক খবরগুলোই ছড়িয়ে দিন।

ভূমিকম্পে বাবা, মা আর তিন বোনকে হারিয়েছে জিনান ও আব্দো। কাছের মানুষ বলতে পাওয়া যাচ্ছে না তেমন কাউকে। দুই শিশুর দায়িত্ব নিয়েছেন তাদের দুঃসম্পর্কের এক দাদা, মোহাম্মদ আল সিরিরি। তিনি বলেন, ওদের তিন বোন, বাবা, মা সবাই মারা গেছে। আল্লাহ এই দুই শিশুকে আমাদের জন্যই রেখেছেন।

জিনান ও আব্দোর মতোই অগণিত শিশু এতিম হয়েছে তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্পে। চিকিৎসকরা বলছেন, বাবা-মা হারানো বেশিরভাগ শিশুর ক্ষেত্রে দায়িত্ব নিয়েছেন আত্মীয়স্বজনরা।

আরও পড়ুন: তুরস্কের ভূমিকম্পে দেড়শ’ বছরের ক্যাথলিক চার্চ ধ্বংস, বেঁচে নেই যাজক-কর্মচারী কেউই

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply