বঙ্গভবন থেকে বিদায় নিচ্ছেন ‘জনগণের রাষ্ট্রপতি’ আবদুল হামিদ

|

ছবি: সংগৃহীত

ইতিহাস তৈরি করে বঙ্গভবন থেকে বিদায় নিচ্ছেন দেশের একুশতম রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক বিদায় সংবর্ধনা পেতে যাচ্ছেন তিনি। রাস্তায় ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে বিদায় জানাবেন বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বাংলাদেশের ৫২ বছরে এই প্রথম কোনো রাষ্ট্রপতির এমন বিদায় আয়োজন। ৬৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনের পুরোটা সময়ই তিনি করেছেন তৃণমূলের মানুষের প্রতিনিধিত্ব। সহজ-সরল ভাষার ব্যবহার এবং সাদামাটা চাল-চলনে নিজেকে পরিচিত করেছেন জনগণের রাষ্ট্রপতি হিসেবে।

দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রায় তিনি পরাজিত হননি কোনো নির্বাচনে। সরকারি দল কিংবা বিরোধী, সবসময়ই ছিলেন শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার পাত্র। তিনি রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতা সংগ্রামের অকুতোভয় সৈনিক। বঙ্গভবনে থেকেও মাটির মানুষ হিসেবে সব মহলে খ্যাতি অর্জনে সক্ষম হয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

ছাত্র সংসদ নেতা থেকে জেলা পর্যায়ের সভাপতি, সংসদ সদস্য থেকে স্পীকার- সব সময়ই তিনি কথা বলেছেন ভাটির মানুষ নিয়ে। সততা, মেধা, প্রজ্ঞায় তিনি মাটি ও মানুষের নেতা। প্রথমবার জনপ্রতিনিধি হয়ে সংসদে রিকশা নিয়ে প্রবেশের দাবি জানিয়েছিলেন স্বয়ং বঙ্গবন্ধুর কাছে। স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘ সময় রাজনৈতিক টানাপোড়েনেও আবদুল হামিদ ছিলেন সৎ, নির্ভীক। দুঃসময়েও রাজনৈতিক সহকর্মীদের আস্থায় ছিলেন তিনি। অপশক্তির কাছে মাথা নত না করা, আপসহীন ব্যক্তিত্বের নাম আবদুল হামিদ।

স্পিকার হিসেবে বিরোধী দল অথবা সরকারি দলের কাছেও তিনি ছিলেন জনপ্রিয়। দায়িত্বনিষ্ঠায় কখনও চক্ষুশূল হয়েছেন নিজ দলে। রাখঢাক না রেখে খোলামেলা কথার জন্য রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাধারণের পছন্দে ছিলেন আবদুল হামিদ। ব্যর্থ হলেও জীবনে কখনোই আশা হারানো উচিত নয়- এমন বক্তব্যে বরাবরই উৎসাহ জুগিয়েছেন পিছিয়ে পড়াদের।

দলের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবার পর দীর্ঘ দশ বছরে আবদুল হামিদ হয়ে ওঠেন জনগণের রাষ্ট্রপতি। জন্ম তার মিঠামইনের অজপাড়াগাঁয়ে। রাষ্ট্রপতি হয়েও ছড়িয়ে গেছেন কাদামাটির সরল গন্ধ। সরলতার অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে অনেকের আগ্রহে থাকবে তার বর্ণাঢ্য চরিত্র।

আরও পড়ুন: শেষ হচ্ছে আবদুল হামিদের বঙ্গভবন অধ্যায়, দেয়া হবে বিদায়ী সংবর্ধনা

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply