চীনে পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে নজিরবিহীন ভিড়, জায়গা না পেয়ে টয়লেটের মেঝেতে ঘুমাচ্ছেন অনেকে

|

ছবি : সংগৃহীত

কোটি কোটি মানুষের চাপে নজিরবিহীন অবস্থার তৈরি হয়েছে চীনের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে। লেবার ডে উপলক্ষে পাঁচদিনের ছুটিতে যে যেভাবে পারছেন ছুটছেন অবকাশ যাপনে। তাতেই উপচেপড়া ভিড় হোটেল-মোটেলে। যেন তিল ধারণেই ঠাঁই নেই। নিরুপায় হয়ে দলবেঁধে পাবলিক টয়লেট কিংবা রেস্টুরেন্টের মেঝেতে রাত কাটাতে হচ্ছে অনেককে। খবর সিসিটিভি নিউজের।

চীনের আনহুই প্রদেশের হুয়াংসানের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। সেখানে দেখা গেছে হোটেল-মোটেলে জায়গা না পেয়ে, দলবেঁধে পাবলিক টয়লেটে রাত্রিযাপন করছেন অনেকে। শোয়ার জায়গাটুকুও মেলেনি, ঘুমাতে হচ্ছে একে অপরের কাঁধে কাঁধ রেখেই।

এমনিতেই অবকাশ যাপনের জন্য জনপ্রিয় পাহাড়ি এলাকা হুয়াংসান। কিন্তু অঞ্চলটিতে গত দু-তিনদিনে লোকসমাগম সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। শুধু এখানেই নয়, চীনের সব পর্যটনকেন্দ্রেই এখন উপচেপড়া ভিড়। এমনকি, সপ্তাশ্চর্যের একটি চীনের মহাপ্রাচীরে রীতিমতো মানুষের জট লেগে গেছে।

মহাপ্রাচীর দেখতে আসা এক পর্যটক বলেন, প্রথমবার বিখ্যাত এই প্রাচীর দেখতে এসেছি আমি। আশঙ্কা ছিল ভিড় থাকবে এখানে। কিন্তু এখন দেখছি পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। মানুষের চাপে দাঁড়ানোই কঠিন।

আরেক পর্যটক বললেন, এই মহাপ্রাচীর আমাদের চীনাদের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। চীনের ইতিহাসেরই গুরুত্বপূর্ণ অংশ এটি। তাই সন্তানকে নিয়ে এসেছি ঐতিহাসিক স্থাপনাটি দেখাতে। এসে দেখি, এখানে প্রচণ্ড ভিড়।

হঠাৎ পর্যটকদের এই চাপের উপলক্ষ্য লেবার ডে’র ছুটি। ২৯ এপ্রিল থেকে টানা ৫ দিনের ছুটি পেয়েছে চীনারা। করোনা মহামারির কারণে, নানা বিধিনিষেধের মাঝে, দীর্ঘ তিন বছর পর, এতো বড় ছুটি মিললো। জিরো কোভিড নীতিতে ঘরবন্দি জীবনে হাঁপিয়ে ওঠা মানুষ, সুযোগ পেয়ে, পাগলের মতো ছুটছেন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। সরকারি হিসেবে, ছুটির প্রথম তিন দিনে, চীনের আকাশ-নৌ-রেল ও সড়কপথে ১৬ কোটির বেশি ট্রিপ পরিচালিত হয়েছে।

মুক্ত বাতাসের আশায় গেলেও নজিরবিহীন ভিড়ের কারণে পর্যটনকেন্দ্রে ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে মানুষকে। যারা সেবা দিচ্ছেন, কাজের চাপে নাভিশ্বাস তাদেরও। নেটিজনেদের অনেকেই এ পরিস্থিতিকে তুলনা করছেন যুদ্ধের সাথে।

ম্যাকাওয়ের ব্যবসায়ী বেকি ঝাং বলেন, গড়ে প্রতিদিন ১৮ থেকে ১৯ ঘণ্টা কাজ করতে হচ্ছে। বাড়ি যাই শুধু খেতে, ঘুমানোরও সময় পাচ্ছি না। পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ দিতে হয়েছে। সত্যি বলতে মনে হচ্ছে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি আসলেই স্বাভাবিক হয়ে গেছে। মানুষের জনস্রোত দেখছি এখানে। সবাই চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে এসেছে।

সাময়িক ভোগান্তি হলেও তীব্র এ ভিড় অবশ্য স্বস্তির বার্তা দিচ্ছে চীনের অর্থনীতিকে। করোনার কারণে বিপর্যস্ত পর্যটন খাত আবারও চাঙা হওয়ায় খুশি সংশ্লিষ্টরা।

এএআর/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply