ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা: ‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব পড়ার আশঙ্কা নেই’

|

তৌহিদ হোসেন:

ইসরায়েলের ওপর প্রথমবারের মতো ইরানের হামলা ঘিরে বিশাল উত্তেজনা। এ ঘটনার পর মধ্যপ্রাচ্যে সঙ্কট বাড়বে। দাঁতভাঙা পাল্টা জবাব দেবে ইসরায়েল, বাতাসে এমন আলোচনা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাস্তবতা স্বস্তির। সামরিক পদক্ষেপ তো আসেইনি, বরং যুদ্ধ এড়াতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো।

দুই দেশের চলমান উত্তেজনা ঘিরে কেমন প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশে, সে প্রশ্নও এসেছে অনেকের মনে। বিশ্লেষকদের মত, ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, ইরানের সাথেও বড় কোনো বাণিজ্য নেই ঢাকার। ফলে দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার কোনো বড় প্রভাব পড়বে না বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। তবে নজরে রাখতে হবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম।

কিন্তু একেবারে যে অস্বস্তি ছিল না, সে প্রমাণ দেখা যায় জ্বালানি তেলের বাজারে। ইরানের হামলার আগে অস্থিরতার শঙ্কায় বিশ্ববাজারে দাম বাড়ছিল লাফিয়ে লাফিয়ে। তবে, হামলার তীব্রতা ও প্রতিক্রিয়া দেখে স্বস্তি ফিরেছে সেখানেও। হামলার পর প্রথম সেশনেই অপরিশোধিত জ্বালানির দাম কমেছে এক শতাংশের বেশি। তাই, আপাতত অর্থনীতিতে তেমন প্রভাবের শঙ্কা দেখছেন না ব্যবসায়ীরা।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ইনফ্লুয়েনশারি চাপ তৈরি হয় না, তা কিন্তু না। আমাদের সমগ্র অর্থনীতিতে তেলের দামের প্রভাব কতখানি এটা একটু পরিমাপের বিষয়।

অর্থনীতিবিদ ড. এম আবু ইউসুফ বললেন, তেলের বাজারে কোনো অস্থিরতা যদি সৃষ্টি হয়, সেটার একটা চেইনের প্রভাব আছে আমাদের এখানে। এই জ্বালানিটা যেখানে যেখানে ব্যবহৃত হয়, সেখানেই জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ের খরচ বৃদ্ধি ও রফতানিতে প্রভাব পড়বে।

এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে নতুন যুদ্ধ শুরু হলে বিপাকে পড়বেন প্রবাসী কর্মীরা। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে রেমিট্যান্সে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন ঝুঁকি দেখছেন না কূটনীতিকরা। ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ বাংলাদেশকে নতুন কূটনৈতিক মেরুকরণে ফেলবে না বলেও মনে করেন তারা।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ইরান ইচ্ছাকৃতভাবে এমন টার্গেট করেছে, যেন বড় কোনো ক্ষতি না হয়। শুধু দেখিয়ে দিয়েছে যে, তারা কিছু করতে পারে। তাদের বেশ কিছু ড্রোন ও মিসাইল ইসরায়েলে পৌঁছেছে। এর মধ্যে অনেকগুলো প্রতিহত করার কথা বলা হয়েছে। আসলে তেমন ক্ষতি হয়নি। ইসরায়েল আবার নিজেদেরকে বাহবা দিচ্ছে যে আমাদের তো কিছুই করতে পারেনি।

উল্লেখ্য, ইরানের সাথে বাংলাদেশের বার্ষিক বাণিজ্যের আকার এখন মাত্র ১৮ মিলিয়ন ডলার।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply