কাঁঠালের বিচির যত উপকারিতা

|

বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল। গ্রাম বাংলায় রীতিমত কাঁঠাল খাওয়া নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা। এক বসায় কে কত কাঁঠাল খেতে পারেন। তবে ফলটি নিয়ে রয়েছে মানুষের অনীহাও। খেতে পছন্দ করেন না অনেকেই। তবে যারা কাঁঠাল খান না, তাদের জন্যও রয়েছে বিকল্প। কাঁঠাল না খেলে খাওয়া যেতে পারে এর বিচি। চলছে বর্ষাকাল। আষাঢ় মাসের ১৪ তারিখ। বৃষ্টির দিনে কাঁঠালের বিচির ভর্তা আর গরম গরম ভাত হলে মন্দ হয় না।

কাঁঠালের বিচি পুষ্টি উপাদান:

কাঁঠালের বিচি পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন, স্টার্চ, মিনারেল এবং অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। প্রতি ১০০ গ্রামে শক্তি রয়েছে ৯৮ ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ৩৮.৪ গ্রাম, প্রোটিন ৬.৬ গ্রাম, ফাইবার ১.৫ গ্রাম, চর্বি ০.৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ০.০৫ থেকে ০.৫৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ০.১৩ থেকে ০.২৩ মিলিগ্রাম, আয়রন ১.২ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ২ মিলিগ্রাম ও পটাশিয়াম ৪.০৭ মিলিগ্রাম।

কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে থায়ামিন ও রিবোফ্লাভিন। উভয়ই ভিটামিন ‘বি’। যা মানব শরীরে শক্তি সঞ্চয়ের পাশাপাশি নার্ভস সিস্টেম, হৃদ্‌যন্ত্র, মস্তিষ্ক, অন্ত্র, মাংসপেশি ইত্যাদির রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে।

এতে আছে ফাইবার ও রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ। এরা শরীরে সহজে হজম হয় না। কিন্তু অন্ত্রে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়াদের খাদ্য হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া ফাইবার ও রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ মাত্রাতিরিক্ত ক্ষুধা নিবারণ করে, রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়, হজমক্রিয়া ও ইনসুলিন সেনসিটিভির উন্নতি ঘটায়।

তাছাড়াও কাঁঠালের বিচি আয়রনের একটি বড় উৎস। নিয়মিত এটি খেলে রক্তস্বল্পতা ও অন্যান্য রক্তরোগের ঝুঁকি দূর হয়। কাঁঠালের বিচি বদহজম রোধ করে হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে কাঁঠালের বিচিতে। চোখের জন্য উপকারি ও রাতকানা রোগ কাটাতেও সাহায্য করে। চুলের আগা ফেটে যাওয়া রোধ করে ও চুল পড়া কমে কাঁঠালের বিচি খেলে। 

অনেকেই কাঁঠালের বিচি ব্যবহার করেন রান্নায়। যেমন: গরুর কিংবা মুরগির মাংসর সাথে কাঁঠালের বিচি দিয়ে রান্না করলে, সেটি খেতে বেশ সুস্বাদু। তাছাড়াও কাঁঠালের ভর্তা তো আছেই। এছাড়াও কাঁঠালের বিচি আগুনে পুড়িয়ে বিকেলে চা দিয়ে খেতেও মজা।

কাঁঠালের বিচির ভর্তা তৈরি করতে যা যা লাগবে:

কাঁচা মরিচ, শুকনা মরিচ, লবণ, পেঁয়াজ, সরিষার তেল (সব পরিমাণ মতো)

যেভাবে তৈরি করবেন:

প্রথমে কাঁঠালের বিচি ভালভাবে সেদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর সেদ্ধ করা বিচিগুলো ভালোভাবে পাটায় বেটে নিতে হবে। এবার একটি পাত্রে কাঁচা মরিচ, শুকনা মরিচ, লবণ ও পেঁয়াজ ভালো করে কচলে মেখে নিন। এবার তাতে দিন সরিষার তেল। বেটে রাখা সেদ্ধ কাঁঠালের বিচির সাথে পেঁয়াজ-মরিচের মিশ্রণ ভালোভাবে মেশান। ব্যস, তৈরি হয়ে গেল কাঁঠালের বিচির ভর্তা। এবার গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

/এআই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply