ইউরোপ-আমেরিকায় ফ্যাশনের ট্রেন্ড এখন ‘মাছের চামড়া’!

|

পিরারুকু মাছ।

ইউরোপ-আমেরিকায় ফ্যাশনের খোরাক এখন মাছের চামড়া। শুনতে অবাক লাগলেও নামীদামি সব প্রতিষ্ঠান মাছের চামড়া দিয়ে এখন তৈরি করছে ব্যাগ, জুতা ও জ্যাকেট। ব্রাজিলের আমাজন নদীর পিরারুকু নামের মাছের চামড়া দিয়েই তৈরি হচ্ছে এসব বিলাসবহুল পণ্য। এই চামড়া দিয়ে তৈরি এক একটি ব্যাগের দাম হতে পারে ৮৫০ ডলার পর্যন্ত, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮০ হাজার টাকার বেশি।। খবর নিউইয়র্ক পোস্টের।

পিরারুকু নামের বিশাল এই মাছ আমাজনের ২ হাজার ৩০০ প্রজাতির মাছের মধ্যে সবচেয়ে বড় আকৃতির হয়। দৈত্যাকৃতির এই মাছ ১০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। সুস্বাদু পিরারুকু ব্রাজিলে বেশ জনপ্রিয় খাবার। তবে এবার এই মাছই হয়ে উঠেছে ফ্যাশনের বড় উপাদান।

সাধারণত গরু, ছাগল, মহিষ এমনকি কুমিড়ের চামড়ার বিভিন্ন পণ্য দেখা যায় বাজারে। পণ্য তৈরিতে মাছের চামড়ার ব্যবহার তেমন দেখা যায় না। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ব্রাজিলের এই মাছ। মূলত টেকসই হওয়ায় পণ্য তৈরিতে এই মাছের চামড়া ব্যবহৃত হয়। তবে দৃষ্টিনন্দন আর বিলাসবহুল এসব ব্যাগ সর্বসাধারণের সামর্থ্যের বাইরে।

এ নিয়ে পাইপার অ্যান্ড স্কাই ব্র্যান্ডের হেড অব পিআর অ্যালিসন কলিন্স বলেন, পিরারুকু মাছ আমাদের পাইপার এবং স্কাই কোম্পানির প্রধান উপাদানগুলোর একটি। আমাজনের এই মাছ বহু শতাব্দি ধরে স্থানীয়রা খেয়ে আসছে। বিশাল এ মাছের চামড়া তারা বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেয়। তাদের সেই ফেলে দেয়া বর্জ্য আমরা নিউইয়র্কে এনে বিলাসবহুল আর সুন্দর এই ব্যাগগুলো তৈরি করি।

তবে পণ্য তৈরিতে পিরারুকুর চামড়া ব্যবহার বেশি দিনের নয়। কয়েক বছর আগেও বেশিরভাগ চামড়া ফেলে দেয়া হতো ময়লার ভাগাড়ে। সেগুলো সংগ্রহ করে ব্যবসা শুরু করে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরো শহরের একটি প্রতিষ্ঠান। এখন বছরে গড়ে ৫০ হাজার চামড়া বিক্রি করে তারা। তাদের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। মাছের এই চামড়া বিক্রি করা হয় ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও।

নোভা কায়েরু ট্যানারির পিআর ড্যানিয়েল আবরুজ্জিনি বলেন, আমরা আমাদের এই চামড়া আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করি। ইউরোপসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজগুলোতে চামড়াগুলো যায়। বিশ্বের সব বড় ব্র্যান্ডই পিরারুকু মাছের চামড়া দিয়ে পণ্য তৈরি করে। আর আমাদের চামড়ার সবচেয়ে বড় অংশই যায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে।

অতিরিক্ত শিকারের কারণে তিন দশক আগেও এই মাছ ছিল বিপন্ন প্রজাতির তালিকায়। তবে সরকারের উদ্যোগে পিরারুকু মাছ শিকার কমিয়ে দেয় স্থানীয়রা। এখনও বছরে মাত্র ৩০ শতাংশ শিকার করা হয়। তারই সুফল মিলেছে। আবারও নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা মিলছে এই মাছের।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply