‘অপ্রতিরোধ্য’ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিয়ে নিবন্ধ প্রকাশ করলো ল্যানসেট জার্নাল

|

ছবি: ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

যেখানে অন্যায় সেখানেই ছিল তার প্রতিরোধ। ছিলেন অপ্রতিরোধ্য এক আলোর পথযাত্রী। লড়ে গেছেন জীবনের শেষদিন পর্যন্ত। গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এই খ্যাতি তাই দেশের সীমানায় আবদ্ধ থাকেনি। বিশ্বখ্যাত ল্যানসেট জার্নাল শনিবার (২০ মে) ডা. জাফরুল্লাহর জীবনী নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। যেখানে অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার অবস্থান এবং মানবসেবায় নেয়া নানা উদ্যোগের কথা উঠে এসেছে।

নিবন্ধটিতে বলা হয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি সম্পন্ন করেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তবুও তৎকালীন সময়ে তিনি সেখানকার নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলতে পিছপা হননি। এরপর ১৯৬৪ সালে জেনারেল অ্যান্ড ভাস্কুলার সার্জারির ওপর উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনে চলে যান লন্ডনে। এরইমধ্যে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে শুরু হয় যুদ্ধ। যুদ্ধের মাঝেই দেশে ফিরে, নিজের চিকিৎসা জ্ঞানকে কাজে লাগান আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবায়। প্রতিষ্ঠা করেন ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল।

যুদ্ধ শেষে, ডা. জাফরুল্লাহ ও তার সহকর্মীরা চলে যান সাভারের গ্রামীণ এলাকায়। যেখানে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে তিনি স্থানীয় নারীদের নিয়োগ দেন প্যারামেডিক হিসেবে। জাফরুল্লাহ চৌধুরী মনে করতেন, নারীদের দক্ষতা ছাড়া দেশের জনগণকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ১৯৭৭ বাংলাদেশ সরকার তার প্যারামেডিক মডেল গ্রহণ করে কাজ শুরু করে।

আন্তর্জাতিক ওষুধ কোম্পানিগুলো বেশি দামে ওষুধ বিক্রি করায় তার নিজস্ব ওষুধ কোম্পানি গড়ে তোলার কথাও উল্লেখ করা হয় প্রকাশিত নিবন্ধটিতে। বাংলাদেশের ওষুধনীতি প্রণয়নের অন্যতম উদ্যোক্তা হিসেবে জাফরুল্লাহ চৌধুরী কথা স্মরণ করা হয়েছে নিবন্ধটিতে।

দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটেও অবদান রেখেছিলেন ডা. চৌধুরী। সে প্রসঙ্গে নিবন্ধে বলা হয়েছে, পিপলস হেলথ অ্যাসেম্বলির ধারণা দিয়েছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ। তার এসব অবদানের জন্য তিনি ১৯৭৭ সালের স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন। এছাড়া ১৯৮৫ সালে র‍্যামন মেসেসে পুরস্কার ও ১৯৯২ সালে রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড পান তিনি। তিনি ছিলেন দরিদ্রদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার পথপ্রদর্শক। মৃত্যুকালে জাফরুল্লাহ রেখে গেছেন সততার নিদর্শন, সত্য বলার শক্তি এবং সুন্দর একটি পৃথিবী তৈরির স্বপ্ন।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply