আমাদের একটা ‘পরীর বাচ্চা’ আছে; নায়িকা মিতুর পোস্টে বিরক্ত পরিচালক

|

জাহারা মিতুর পোস্টের স্ক্রিনশট।

আমাদের একটা ‘পরীর বাচ্চা’ আছে ফেসবুকে এমন ক্যাপশন দিয়ে ছবিসহ একটি পোস্ট দিয়েছেন অভিনেত্রী জাহারা মিতু। পোস্ট করা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পরিচালক দীপঙ্কর দীপনের কোলে পরীমণির সন্তান, আর পাশে দাঁড়ানো জাহারা মিতু। গত রোববার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় পোস্টটি করেন এই অভিনেত্রী। আর তাতে অনেকে বিরূপ মন্তব্য করেন। এরপর বুধবার (১৬ আগস্ট) রাত দুইটা ৪০ মিনিটে বিরক্তি প্রকাশ করে একটি স্ট্যাটাস দেন দীপঙ্কর দীপন। তার স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো:

“এটা কি পোস্ট, ভাই? এই পোস্টের ছবি ও লেখা মিলে কী দাঁড়ায়, সেটা কি তুমি বুঝ না মিতু? কমেন্ট দেখ, যা তুমি ডিলিটও করনি। আর, এদিকে অন্যদের বোঝাতে বোঝাতে আমার জীবন শেষ, জাহারা মিতুর সাথে আমার কোনো (বিশেষ) সম্পর্ক নেই। দহরম-মহরম সম্পর্কও নেই, বরং খুব ফরমাল সম্পর্ক। একবার দু’বার দেখা হয়েছে, তাও কোনো অনুষ্ঠানেই। অনেকে বিশ্বাস করে, অনেকেই করে না; খিক খিক করে হেসে বলে, ভাই ছবি ও পোস্টের ভাষা তো অন্য ইঙ্গিত দেয়। আর পারিবারিক অশান্তির কথা তো না-ই বললাম, সেটা সবাই বুঝবে।

ছবি দেখে মনে হচ্ছে, আমরা গিয়ে রাজ্যকে নিয়ে ছবি তুলেছি, অথচ বিষয়টা ছিল পুরো উল্টো। আমি ভালো মতো খেয়ালই করিনি সেদিন আমার পাশে কে ছবি তুলেছে। সিচ্যুয়েশনটা তেমনই ছিল। সেদিন ‘সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগ’ এর লোগো উন্মোচনের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানের প্রায়ই শেষের দিকে নির্মাতা চয়নিকা দি (চয়নিকা চৌধুরী) এসে বললেন, দাদা পরীমণি চায় যে আপনার সাথে রাজ্যের ছবি থাকুক। পরী অপেক্ষা করছে। তার একটু আগে হাউসের সবচেয়ে প্রিয় মানুষ হিসেবে পরী আমার হাতে র‍্যাফেল ড্র এর বক্স তুলে দিয়েছিল। আমি সেটা দিয়েছিলাম, রায়হান রাফিকে। আমি রাজ্যের কাছে গেলাম। পরী রাজ্যকে আমার কোলে তুলে দিল। রাজ্য ভীষণ ভীষণ কিউট একটা বাচ্চা। এতো মানুষের মধ্যে বাচ্চাটাকে সামলে রাখা নিয়ে খুব সিরিয়াস ছিলাম। এতো তুলতুলে বাচ্চা। রাজ্য এর অদ্ভুত বিষয় হলো থেমে থাকলে ও কাঁদে। হাঁটলে কান্না থামিয়ে চারপাশে তাকায়, আমি আরও শক্ত হয়ে রাজ্যকে সাবধানে কোলে আগলে হাঁটছিলাম। ওই সময়ে অনেকে এসে ছবি তুলেছে। সেসব দিকে নজর দেয়ার মতো অবস্থা আমার ছিল না। অনেককে আমি দেখিওনি। এমনকি আমি নিজেও কোনো ছবি তুলতে পারিনি। আমি অস্থির ছিলাম, রাজ্যর যেন কোনো অসুবিধা না হয়।

দীপঙ্কর দীপনের ফেসবুক স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট।

আমি ইদানিং ফেসবুক থেকে একটু দূরে থাকি। গতকাল রাতে আমাকে ইনবক্সে ক’জন নক করলো। সেখানে জানতে পারলাম, স্ক্রিনশটের পোস্টটি সম্পর্কে। পরে জানলাম পরীর পোস্ট করা অনেক ছবি থেকে একটি ছবি জাহারা মিতু রিপোস্ট করেছে। তাতে আমার সমস্যা নেই। কিন্তু ভেরিফায়েড পেজে আর কোনো ছবি পোস্ট না করে শুধু আমাকে নিয়ে ছবিটা পোস্ট করা কেন, পরীর সাথে ছবিও তো ছিল। তাও না হয় ঠিক আছে, এই পোস্ট এর লেখা এই রকম কেন? দুটো মিলে এই পোস্ট আমাকে খুব বিব্রত-বিরক্ত-দুঃখিত করেছে। ছবির পোস্টের কিছু কমেন্ট পড়লেই বুঝবেন। আর ব্যক্তিগত জীবনে কি হয়েছে, হচ্ছে, সেটা আর না বলি।

হয়তো বলবেন মিতুকে সরাসরি বলতেন, ডিলিট করে দিতো পোস্টটা। দিতো হয়তো। কিন্তু পোস্টটা তো পাবলিক ছিল- তাতে অনেক মানুষ যারা এই পোস্ট দেখেছে, আমাকে চেনে, তাদের মনে তৈরি হওয়া ধারণা আমি বদলাতে পারতাম না। কিছু দেখে যারা কিছু জানতে চায়, তাদের বিষয়টা বোঝানো যায়। কিন্তু যারা কিছু জানতে না চেয়ে ধারণা করে ফেলে তাদের ভুল ধারণা বদলানো যায় না। কখনও যায় না, জানাই যায় না। তাই আমাকেও পাবলিকলি বলতে হলো। যদিও সব সমস্যা বলতে পারলাম না।

আসলে আমরা কীভাবে ফেসবুকে পোস্ট করবো, ছবির ক্যাপশন কি দিবো, কি ভাষা ব্যবহার করবো সেগুলো খেয়াল করা খুব প্রয়োজনীয়। বাক্য বা শব্দ চয়নের কারণে পুরো বিষয়ের সাথে সম্পর্ক নেই, তা যেন কারও জীবনে বিব্রতকর না হয়ে যায়, ব্যক্তিগত জীবন কঠিন না হয়ে যায়, সেটা লক্ষ্য রাখা ভীষণ দরকার। প্লিজ।”

(নোট: দীপঙ্কর দীপনের ফেসবুক স্ট্যাটাসের বানান ও বাক্য গঠন সংশোধন করা হয়েছে।)

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply